বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে ৭৯০ জন। এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১ হাজার ৭১৯ জনে। এবং সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৮৬ জনে।
বুধবার (৬ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয় হাজার ৭৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ছয় হাজার ২৪১টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৯৯ হাজার ৬৪৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৭৯০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭১৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও তিনজন। এ নিয়ে মোট ১৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৯৩ জন এবং এখন পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১৪০৩ জন।
করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা এই মূহুর্তে আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে দু’দিন আগেই। প্রতিমূহুর্ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ২ লক্ষ ৫৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে আজ বুধবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। এরমধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ৭২ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা।
বাংলাদেশেও প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বিশেষ করে পরীক্ষা যতো বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। বাড়ছে ঝুঁকি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে দোকান-পাট খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে সাধারণ ছুটি ১৫ তারিখ বাড়ানো হতে পারে বলেও জানান তিনি।
আজ সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করার আগে স্বাগত ভাষণে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে মানুষকে সুরক্ষিত রেখে জেলা পর্যায়ে কিছু কুটিরশিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
প্রসঙ্গত: গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০৫ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
সম্মিলিত সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ আজ (বুধবার ৬ মে) দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ৫৯১ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮১ জনের। এছাড়া সুস্থ হয়েছে ফিরেছেন ১২ লাখ ৪৭ হাজার ২১২ জন।
এরমধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৭২ হাজার ২৭৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬৬৯ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছেন ইতালিতে ২৯ হাজার ৩১৫ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৮৫ হাজার ২৩১ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ১৩ জন।
অন্যদিকে আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা স্পেনে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৬১ জন। দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ হাজার ৬১৩ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭১৮ জন।
এদিকে মৃত্যু সংখ্যায় স্পেনকে ছাড়িয়ে বরাবরের রয়েছে মতোই যুক্তরাজ্য। মৃতের সংখ্যায় এখন তৃতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপের এ শীর্ষ কর্তা দেশটি। সম্প্রতি একটি সংশোধিত তালিকা প্রকাশের পর দেশটির করোনা চিত্রের এ পরিবর্তন ঘটেছে।
দেশটিতে এখন মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪২৭ জন। আক্রান্ত সংখ্যা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯৯০ জন। দেশটিতে আক্রান্তের পর সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৪৪। গত বুধবার (২২ এপ্রিল) সংশোধিত হিসাব প্রকাশের আগেও দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছিলো ২১ হাজার ৬৭৮ জন।
যুক্তরাজ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণকারী করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই প্রকাশ করা হয়। হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন কেয়ার হোম বা অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয় সাপ্তাহিকভাবে। সর্বশেষ গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) কেয়ার হোমসহ অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া করোনা রোগীদের সংখ্যা যোগ করার পর যুক্তরাজ্যের করোনা চিত্রের রাতারাতি এ পরিবর্তন হয়েছে।
এরপরই পঞ্চম সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ৫৩১ জন মারা গেছে ফ্রান্সে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৫১ জন। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৫২ হাজার ৭৩৬ জন।
এছাড়াও জার্মানি ও রাশিয়ায় যথাক্রমে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭ জন্য এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৯ জন লোক আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছে যথাক্রমে জার্মানিতে ৬ হাজার ৯৯৩ জন ও রাশিয়ায় ১ হাজার ৫৩৭ জন।
আরো পড়ুন:
মঙ্গলবার: প্রতিদিনের রেকর্ড ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ আক্রান্তের নতুন রেকর্ড!
আমেরিকা: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সেনার চেয়েও করোনায় বেশি মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে
/এসএস