ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলার একমাত্র করোনা আক্রান্ত রোগী ঢাকা ফেরত যুবক মো. নুরে আলম করোনাভাইরাসকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

গত ১১ দিন ধরে উপজেলার মনপুরা সরকারি ডিগ্রী কলেজে অবস্থিত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে আজ মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন নুরে আলম। এসময় নুরে আলমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা  জানিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, স্বস্থ্য কর্মকর্তাসহ অনেকে।

নুরে আলম উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সেলিমের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফুড পান্ডার সদরঘাট শাখায় চাকরী করতেন। গত ২১ এপ্রিল তিনি বাড়ি ফিরেন। পরে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ২৩ এপ্রিল তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদুর রশীদ ছাড়পত্র দিলে সুস্থ হওয়া যুবক বাড়ি ফিরেন। এই সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও হাতে তালি দিয়ে বিদায় জানান উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদুর রশীদ, চিকিৎসকসহ আরো অনেকে। এছাড়াও তার পরিবারের জন্য একটি ফল ভর্তি ব্যাগ, ইফতার ও ঈদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়।

করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়া যুবক নুর আলম জানান, সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরতে পারায় মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। এই দুঃসময়ে সবচেয়ে বেশি সাহস যুগিয়েছেন ইউএনও স্যার। তিনি এখানে ( আইসোলেশন সেন্টার) এসে আমার সাথে আড্ডা দিতেন ও রাতে মোবাইলে কথা বলতেন। আমার মোবাইলে ফ্লাক্সিলোডসহ খাওয়ার জন্য ফল দিতেন।

এছাড়া হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় তাদের উছিলায় আল্লাহ আমাকে সুস্থ্য করে দিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মেডিকেল টিমের প্রধান ডা. মাহমুদর রশীদ জানান, পরপর দুইবার করোনা আক্রান্ত যুবকের নমুনার পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসায় তাকে মেডিকেল ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, করোনা আক্রান্ত যুবক সুস্থ হওয়ায় সবার মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১০ টি বাড়ির ৪১ টি ঘরের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গতঃ- গত ২১ এপ্রিল নুরে আলম ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরেন। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহামুদুর রশীদ নুরে আলমসহ আরো তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠান।

২৩ এপ্রিল রাতে ওই যুবকের করোনা পজেটিভ আসে। অপর তিনজনের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ। রাতেই ইউএনও, ওসি ও হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা নুরে আলমকে বাড়ি থেকে এনে মনপুরা সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এবং আক্রান্ত যুবকের পরিবারের ৬ সদস্যসহ আরো ১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠালে সেগুলোর রির্পোটও নেগেটিভ আসে। তারপর থেকে তিনি আইসোলেশনে ছিলেন।

এদিকে ভোলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ভোলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ জন। এদের মধ্যে বোরহানউদ্দিনে এক জন, মনপুরায় এক জন, ভোলা সদর উপজেলায় তিন জন। এদের মধ্যে এক জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাকীরা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

/এসএস