
জামালপুরে একটি কওমী মাদরাসায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল মাদরাসা থেকে ১৬টি সিলিং ফ্যান এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
চুরির ঘটনায় জড়িত একজন অন্য আরেকটি চুরির ঘটনায় ধরার পরও তাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানয়ী নারায়ণপুর ফাঁড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ১১নং শাহবাজপুর ইউনিয়নের ‘জামিয়া আরাবিয়া মিনহাজুল উলুম মাদরাসায়’ চুরির ঘটনা ঘটে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে মাদরাসা বন্ধ থাকা সুযোগ নিয়ে চোরের দল মাদরাসার টিনের চাল কেটে শ্রেণীকক্ষে ঢুকে পুরো মাদরাসায় থাকা ১৭টি ফ্যান এর ১৬টি চুরি করে নিয়ে যায়। পরে শুক্রবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই ঘটনায় নারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জিডি করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি শাহবাজপুর বাজারে করা অন্য একটি চুরির ঘটনায় গতকাল শনিবার ৬জনকে আটক করে ফাঁড়ি পুলিশ। শাহবাজপুর বাজারের এক দোকান থেকে চুরিকৃত মালামাল সরানোর সময় তাদের আটক করে নারায়ণপুর ফাঁড়ি পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে মাদরাসায় চুরির ঘটনায় জড়িত রোকন ফকির নামে একজন ছিলো। কিন্তু আটকের পরও পুলিশ তাদেরকে উদ্ধারকৃত খোয়া যাওয়া দোকানের মালামাল রেখে ছেড়ে দেয়।
শাহবাজপুর ‘জামিয়া আরাবিয়া মিনহাজুল উলুম মাদরাসা’র প্রতিষ্ঠাতা ও মোতাওয়াল্লী ডা. শাহআলম জানান, মাদরাসার প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার মালামাল চুরি করেছে। ১৬টি ফ্যান চুরি করেছে। একেকটি প্যারাডাইস ফ্যানের দাম প্রায় ২৭৫০ টাকা করে।
ডা. শাহআলম বলেন, অন্য ঘটনায় এক চোর আটক হলেও পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমাদেরকে আজকে ডেকেছে। আমরা জিডি করেছিলাম। এখন আমাদেরকে থানায় গিয়ে মামলা করতে বলছে পুলিশ। মাদরাসার পশ্চিম পাশে বাড়ি মোজাম্মেল ফকিরে ছেলে রোকন ফকিরকে পুলিশ আটক করতে পারতো কিন্তু করেনি।
এই প্রতিবেদকের কাছে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোকন ফকির এলাকায় ইয়াবা কারবারি হিসেবে পরিচিত। এর আগে মাদক নিয়ে গ্রেফতারও হয়েছিলো। কিন্তু অদৃশ্য ইশারায় মুক্তি পেয়ে তারা ইয়াবা এবং চোরা কারবারি অব্যহত রেখেছে। অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে এবং অন্যদেরকে গ্রেফতার করছে না।
এ বিষয়ে মাদরাসায় চুরির ঘটনায় সরেজমিনে পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা নারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিন এর কাছে জানতে চাইলে পাবলিক ভয়েসকে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
শাহবাজপুর বাজারে অন্য একটি চুরির ঘটনায় গতকাল ৬জনকে আটক করা হয়েছিলো এবং তাদের মধ্যে একজন (রোকন ফকির) মাদরাসায় চুরির ঘটনায় জড়িত ছিলো উল্লেখ্য করে তাদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে জানি না। অন্য একটি ঘটনায় কয়েকজন আটক হয়েছে। কিন্তু তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে কিনা শুনিনি।
‘তাহলে তারা এখন কোথায় আছে?’ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ফাঁড়িতে ছিলো। আমি বিষয়টা সঠিক জানি না। জেনে আপনাকে জানাবো’।
এদিকে চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখে অপরাধীদের সঠিক বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টরা।
/এসএস