করোনাভাইরাসে নিহত জামালপুরের পুলিশ সদস্য এসআই সুলতানুল আরেফিনের (৪৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার শেষ বিকেলে তার নিজ গ্রাম জামালপুরের মেষ্টা ইউনিয়নের হাজীপুর বাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
এসআই (সাব ইন্সপেক্টর) সুলতানুল আরেফিনের (৪৪) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শনিবার ভোরে রাজাবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দাম্পত্য জীবনে তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে জামালপুর সদর থানা পুলিশের বিশেষ অনুরোধে জানাযা ও কাফন-দাফনের দায়িত্ব পালন করেছে ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন জামালপুর জেলা টিম।
জানাযা ও দাফনে উপস্থিত ছিলেন, ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন জামালপুর জেলা টিম প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, টিম সদস্য লিয়াকত হোসেন, সাজেদ হোসাইন, উসামা তামজীদ, ইব্রাহিম মুহসিন, মাহদি হাসান শিপন।
[caption id="attachment_76038" align="aligncenter" width="571"] সুলতানুল আরেফিনের দুই ভাইয়ের আহাজারি[/caption]
জানাযা নামাজে ইমামতি করেছেন সুলতানুল আরেফিনের ছোট ভাই হাফেজ মো. শিশির। এছাড়াও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শামসুজ্জোহা জানাযায় উপস্থিত ছিলেন।
ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশনের টিম প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে সদর থানার ওসি- পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) স্যার আমাদেরকে ফোন করেন এবং লাশ দাফনের ব্যাপারে বলেন।
আশরাফুল আলম বলেন, ঢাকা থেকে লাশ পৌঁছানোর আগেই দুপুর ২টার দিকে আমরা নিহত পুলিশ সদস্য সুলতানুল আরেফিনের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হই। এরপর সাড়ে ৪টার দিকে লাশ পৌঁছলে আমরা জানযা-দাফন সম্পন্ন করি। এসময় ওসি মোঃ সালেমুজ্জামান স্যার সার্বক্ষণিক আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন।
ওসি সদর মোঃ সালেমুজ্জামান জানান, পুলিশের ব্যবস্থাপনায় মরহুমের মরদেহ গ্রামে পাঠানো হয়েছে। সদর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে মাননীয় জেলা পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এসময় মাননীয় জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ও উপস্থিত ছিলেন।
[caption id="attachment_76033" align="aligncenter" width="570"] স্বজনদের আহাজারি[/caption]
ডিমএপি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অবস্থার অবনতি হলে তিনি রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিম বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে। তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্রসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এদিকে সুলতান আরেফিনের মৃত্যুতে জামালপুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সুলতান আরেফিনের মৃত্যুতে জণকল্যাণে নিবেদিত জামালপুরের সন্তান- দুই পলিশের মৃত্যু হলো। জেলার দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যুতে পুরো জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
[caption id="attachment_76037" align="alignnone" width="571"] জানাযা[/caption]
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল রাতে জামালপুরের আশিক মাহমুদ (৪০) নামের আরেক পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। তিনিও রাজারবাগ পুলিশ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ১০নং ঝাউগড়া ইউনিয়নের ইন্দ্রবাড়ী গ্রামে। তিনি ডিএমপি, ঢাকার ট্রাফিক উত্তর বিভাগের এয়ারপোর্টে জোনে কর্মরত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এ নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ৫ সদস্য করোনা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করলেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে ৭৪১ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শেষ ২৪ ঘন্টাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ২৩২ জন। এরমধ্যে ডিএমপি’র ৩৫৬ জন। এছাড়াও আইসোলেশনে আছেন ১৭৪ পুলিশ সদস্য, কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২৫০ জন, সুস্থ হয়েছেন ৫৭ জন।
প্রশাসনের অনুরোধে জামালপুরে মৃত ব্যক্তির দাফন করলো ইকরামুল মুসলিমীন
জামালপুরের পুলিশ সদস্য আশিক মাহমুদ করোনায় মারা গেছেন
করোনায় প্রাণ দিলেন আরো এক পুলিশ সদস্য, শোকের ছায়া জামালপুরে
/এসএস