শফিক ইসলাম, যশোর: নিরন্তর ছুটে চলা এক দল স্বেচ্ছাসেবক! বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত ঠিক তখন যশোর শহরে নিরন্তর ছুটে চলছে এ স্বেচ্ছাসেবক দল। ওরা চেষ্টা করছে ওদের সাধ্যমত অভুক্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার।
বলছিলাম যশোর শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগো তারুণ্য’র কথা! বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, ঢাকার সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে জাগো তারুণ্য উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। প্রতিষ্ঠানের একদল নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবী সারাদিন প্যাকেজিং এ ব্যস্ত থাকেন, দিনশেষে রাতের আধারে খাবার নিয়ে ছুটে চলেন অভুক্তদের দূয়ারে।
যশোর পৌরসভা ও পার্শ্ববর্তী সদর এরিয়ার সর্বমোট ১০০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন তারা। পরিবারপ্রতি ৪ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবণ, ০.৫ লিটার তেল ও বড় এক প্যাকেট বিস্কুট প্রতিটি ফ্যামিলি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত।
জেলা প্রশাসন, যশোর কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে তারা উক্ত বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। সংগঠনটি তাদের এই বিতরণ কার্যক্রম গত ১০/০৪/২০২০ খ্রি. থেকে শুরু করে ২২/০৪/২০২০ খ্রি. পর্যন্ত চলমান রাখে।
তাদের এই তালিকায় যারা রয়েছেন তারা হলেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা এই মুহূর্তে অসহায় আছেন, শ্রমজীবী, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ইজিবাইক চালক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষেরা যারা করোনা পরিস্থিতে একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক যশোরের প্রতিনিধি নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) প্রীতম সাহা বলেন, ‘বর্তমান এই সংকটময় পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একদল স্বেচ্ছাসেবী সাধারণ শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার এবং বলাবাহুল্য যে তারা মানবতার সেবায় অনেকাংশে এগিয়ে আছেন।
পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরাও যদি তাদের মাধ্যমে অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে শ্রমজীবী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়য় তাহলে করোনা পরিস্থিতিতে আর যাই হোক তাদের খাবার কষ্ট হবে না’।
সংগঠনের সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম বাঁধন বলেন, এই পরিস্থিতিতে জাগো তারুণ্য অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে পেরে ধন্য মনে করছেন, পাশাপাশি বিদ্যানন্দ- Bidyanondo-কে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সাধুবাদ, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই জাগো তারুণ্য’কে তাদের স্থানীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগী পার্টনার হিসেবে মনোনীত করার জন্য।
এছাড়া ভবিষ্যতেও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন তাদের স্থানীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জাগো তারুণ্যকে স্মরণ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মোঃ শফিকুল ইসলাম।
বিদ্যানন্দ প্রতিনিধি মোঃ রহমত হোসেন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যশোর জেলা প্রশাসনের প্রতি, সামগ্রিকভাবে উক্ত কর্মসূচির পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য।
জাগো তারুণ্য’র সভাপতি শেখ কামাল উদ্দিন মন্টু বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতার পাশাপাশি জাগো তারুণ্য এই বিপদের দিনে সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে চেষ্টা করে যাবে।
জাগো তারুণ্যের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ক টিম লিডার এস. এম. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই দুর্দিনে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় শ্রমজীবী কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে জাগো তারুণ্য খুবই আনন্দিত।
বর্তমান এই পরিস্থিতির উত্তরণ না পর্যন্ত আমরা শ্রমজীবী সকল মানুষের পাশে থাকবো। এছাড়াও তিনি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন বিদ্যানন্দ-Bidyanondo'র প্রতি। সর্বোপরি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি।
/এসএস