
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট দূর্যোগে দেশে উঁকি দিচ্ছে দূর্ভিক্ষের। ভয়ঙ্কর এ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে প্রধানতম কৌশল সামাজিক দূরত্ব রেখে চলার নির্দেশনা মানছে ক্ষুধার্ত মানুষ।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া একাধিক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যপারে দিয়েছেন নির্দেশনা। সরকারি-বেসরকারিভাবে যারা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ত্রান সগযোগিতা দিচ্ছেন তাদের প্রতি সামাজিক দূরত্ব ঠিক রাখার বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু কোনো নির্দেশনাই মানছে না কেউ। খুলনাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় খাবারের জন্য বিক্ষোভও করতে দেখা গেছে মানুষজনকে।
আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ভাইরাল হয় অনলাইনে। ছবিদে দেখা যায় ত্রাণ বিতরণের জন্য সামাজিক দূরত্ব রাখার সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে যাতে সবাই নির্দিষ্ট দূরত্ব ঠিক রেখে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু তাতেও মিলছে না ফল। লোকজন ভিড় করছেন নির্দেশনা অমান্য করেই।
[caption id="attachment_73936" align="alignnone" width="570"]
ত্রাণ নেওয়ার জন্য এভাবেই আগে থেকে লোকজন ভিড় করতে থাকে নির্দিষ্ট দূরত্বের নির্দেশনা অমান্য করেই, ছবি: পাবলিক ভয়েস[/caption]
পাবলিক ভয়েসের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করে ছবিগুলোর এলাকা চিহ্নিত করা হয়। জানা যায়, বরিশাল বিভাগের একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক সরকারি ত্রাণ বিতরণকালে ওই দৃশ্যধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে তিনি জানান, লোকজন যাতে সতর্কতার সাথে ত্রাণ গ্রহণ করতে পারেন এজন্য মাটিতে আটা দিয়ে সাদা দাগ করে ঘর করে দেওয়া হয়েছে। জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে যাতে সবাই দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন। ‘কিন্তু কে শোনে কার কথা এখানে দূরত্ব চিহ্নিত করা হচ্ছে পাশেই সবাই জট পাকিয়ে ঘোরাঘুরি করছে’ বলেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান।
স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দূরত্ব নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব কিনা, কিংবা বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারতেন উল্লেখ্য করলে তিনি বলেন, ‘আসলে লোকজন ক্ষুধার্ত। এজন্য তারা অনিশ্চিত ভয়ের চেয়ে ক্ষুধার্ত থাকাকে বেশি উপলব্ধি করছে।
[caption id="attachment_73937" align="alignnone" width="570"]
দূরত্ব নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেক এভাবেই দাগ দেয়া হয়েছিলো, ছবি: পাবলিক ভয়েস[/caption]
অন্যদিকে আমাদের প্রয়োজনীয় জনবল বা সক্ষমতাও নেই যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রান পৌঁছে দেবো। আমরা চেষ্টা করছি প্রয়োজনীয় সতর্কতাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ বিতরণ করতে সেজন্য আমরা ত্রাণ নেওয়ার জন নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে দাঁড়ানোর জন্য জায়গা চিহ্নিত করে দিয়েছি’।
সারাদেশেই প্রায় এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। বেসরকারিভাবেও যারা ত্রাণ বিতরণ করছেন সেক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা। কেউ কেউ বলছেন, এক্ষেত্রে আসলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা দরকার। এভাবে ত্রাণ বিতরণ না করে সরকারিভাবে সারাদেশে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া দরকার বলে মনে করছেন অনেকে।
/এসএস