যশোরের চৌগাছায় ইতালি ফেরত এক দম্পতির পরিবারের ছয়জনকে ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ রাখা হয়েছে। স্বামীর পরিবারের ছয়জন বাড়িতেই একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইতালি থেকে দেশে ফেরেন স্বামী-স্ত্রী। তিন দিন চৌগাছায় থাকার পর সোমবার শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহের আরাপপুর মাস্টার পাড়ায় বেড়াতে যান ওই ব্যক্তি। সেখানে মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ওই ব্যক্তির শ্বশুরবাড়িতে একজন স্বাস্থ্য সহকারীর তত্ত্বাবধানে তাদের ১৪ দিনের ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ রাখা হয়।
এদিকে চৌগাছায় মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। বুধবার ওই ব্যক্তির পরিবারের ছয়জনকে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ রাখা হয়েছে। তবে ওই দম্পতি বা তার পরিবারের কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘আমি সকালেই সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) ফোন করে নিশ্চিত হয়েছি ওই দম্পতির শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই ব্যক্তির পরিবারের ছয়জনকে ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘আমি নিজে গিয়ে তাদের কীভাবে থাকতে হবে, সে বিষয়ে বুঝিয়ে এসেছি। তারা নিজেরদের ঘরেই থাকবেন।’ তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সতর্ক করে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রচারণায় হাঁচি-কাশির সময় নিয়ম মেনে চলা, প্রয়োজন ছাড়া জনসমাগস্থলে না যাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও খাবার পর্যাপ্ত সেদ্ধ করে খেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়া ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১২টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম, ব্যবস্থাপনা কমিটি ও র্যাপিড রেসপন্স কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ওই পরিবারের একজন বলেন, ‘আমাদের শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ না থাকলেও যেহেতু ভাই-ভাবি ইতালি থেকে এসেছেন, সেহেতু আমাদের একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ১৪ দিনের জন্য ‘হোম কোয়ারেনটাইনে’ থাকতে বলা হয়েছে।’
এমএম/