চট্টগ্রামের ওমর গণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের পিতা মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ-র ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)
১১ ই মার্চ বুধবার সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক শোক বার্তায় আল্লামা বাবুনগরী বলেন,মাওলানা হাবিবুল্লাহ রহ. একজন গুণী মানুষ ছিলেন। চট্টগ্রাম সাতকানিয়া মাহমুদুল উলুম আলিয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও দেওদীঘি কাছেমুল উলুম কওমি মাদরাসার মুহতামিম ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রামের একাধিক মাদরাসার উপদেষ্টা সদস্য ছিলেন। একজন হোমিওপ্যাথী ডাক্তার হিসেবেও তাঁর ছিলো যথেষ্ট সুনাম। আমরণ তিনি দ্বীনের বহুমুখী খিদমাত আঞ্জাম দিয়েছেন। ইতিহাস তার অমর কীর্তি চিরকাল স্মরণ রাখবে। আমি তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।
শোক বাণীতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মাওলানা হাবিবুল্লাহ’র ইন্তেকালে আমরা দেশের একজন বরেণ্য আলেমকে হারালাম। যার অভাব দীর্ঘদিন অনুভূত হবে। মরহুম মাওলানা হাবিবুল্লাহ’র অনেক মসজিদ, মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে দ্বীনের বহুমুখি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। অনেক আলেমেদীন তৈরি করে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। রব্বুল আলামিন তাঁর সকল মেহনতকে কবুল করে তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন এবং মরহুমের পরিবার-পরিজনকে সবর করার তওফিক দিন, আমীন।
স্মৃতিচারণ করে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা হাবিবুল্লাহ রহ এর সাথে আমার সু-সম্পর্ক ছিলো। তিনি আমাকে খুব বেশি মুহাব্বাত করতেন। আমার স্বরচিত বই " মীলাদ-কিয়াম ও সুন্নাত বিদআত "প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বইয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি আমার ওয়াজ-নসিহতেরও খুব ভক্ত ছিলেন।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা হাবিবুল্লাহ রহ একজন গর্বিত পিতা।মৃত্যুকালে তিনি অসংখ্য ভক্তবৃন্দ ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর সন্তানরাও সুযোগ্য আলেম হয়ে দ্বীন ও ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন। তাঁর সন্তানদেরও রয়েছে ব্যাপক সুখ্যাতি ও পরিচিতি।
মাওলানা হাবিবুল্লাহর এক সন্তান মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন বাংলাদেশের পরিচিত একজন ইসলামিক আলোচক এবং লেখক-গবেষক। ওয়াজের ময়দানে রয়েছে তাঁর প্রশংসনীয় পদচারণা। তিনি চট্টগ্রামের ওমর গণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ছিলেন।
তিনি মাসিক আত-তাওহীদের সম্পাদনার গুরু দায়িত্ব পালন সহ জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে লিখে যাচ্ছেন।
অপর সন্তান আলেম মাওলানা জাহেদ হোসাইন। তিনি অত্যন্ত দক্ষ একজন আলেম। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পারভেজ মোশাররফের শিক্ষক ও বিশেষ সচিব হিসেবে ছিলেন। জামিয়া ইসলামীয়া লাহোর পাকিস্তানে শিক্ষকতা করেছেন। আর এক সন্তান হাফেজ সাদেক হোসাইন তিনি সৌদি দূতাবাসে চাকরী করেন।
মাওলানা হাবিবুল্লাহ রহ. তাঁর রেখে যাওয়া যোগ্য সন্তানদের কারণে মরেও অমর হয়ে থাকবেন।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মহান প্রভুর দরবারে আমি দুআ করি, আল্লাহ তাআলা তাঁর সকল দ্বীনি খেদমতকে কবুল করুন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করুন, এবং তাঁর সন্তানদেরকে আরো বেশি গবেষনামূলক দ্বীনের খিদমাত করার তাওফীক দান করুন,আমিন।
এছাড়াও পৃথক পৃথক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন দলের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সভাপতি ও মেয়রপ্রার্থী মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম।
মাওলানা হাবিবুল্লাহ-এর ইন্তেকালের সংবাদ শুনে রাজধানী ঢাকার পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, দক্ষিণ মেয়রপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুর রহমান ও নগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।