
‘গুলিস্তান মহল্লায় হকারদের কাছ থেকে টাকা নেয়, কিছুদিন পরে দেখা গেল যে সেও একজন নেতা। এরপর পাতি নেতা, উপনেতা, পূর্ণ নেতা তারপর কমিশনার।’- বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে সদ্য যোগ দেওয়া উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ১২ দিনব্যাপী এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
নুরুল হুদা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, জার্মানিতে এমন হয়, আমাদের তেমন হয় না কেন? কয়েকদিন আগে একদল পলিটিশিয়ান এসেছিলেন। তারা এ রকম বললেন। আমি তাদের নিচু গলায় বললাম, আগে সুইজারল্যান্ড হতে হবে ‘ আমাদের দেশে তো মলম পার্টি নিয়ে কাজ করতে হয়। ব্যাগ টানা পার্টি নিয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের দেশে ক্যাসিনো মেম্বার নিয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের পকেটমার নিয়ে কাজ করতে হয় বলেও যোগ করেন তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কারও তদবির শোনা হয় না উল্লেখ করে নূরুল হুদা বলেন, ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করার পেছনে চারটি কমিটি কাজ করছে। কমিটিগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী। কমিটি এমন শক্তিশালী যে, আমার কথাও শোনে না। আমি দুই-একটা তদবির করলে মাথা এদিক-ওদিক নাড়ায়। কমিটি এমন শক্তিশালী।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। এটা নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। আমরা বলি কী-সেই একই কথা, যে সুইজারল্যান্ডে তো পেপার ভোট হয়। কিন্তু সেখানে তো যুদ্ধের মতো বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হয় না। পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নামাতে হয় না। সেই দেশে পোস্টারে আকাশ দেখা যায় না, বাতাস আসে না এমন তো হয় না। তাই বলে কী আমাদের এখানে নির্বাচন করতে হবে না। সেভাবেই নির্বাচন করতে হবে।
সিইসি বলেন, ইভিএমের ফলেই এখন আর সেই দশটা হোন্ডা, বিশটা গুণ্ডার যুগ নেই। এদের ভাড়া করতে প্রার্থীদের যেতে হবে না। যারা ভোট ছিনতাই করবে, এদের কাছে যেতে হবে না। আর নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকে তাদের পেছনে যারা টাকা দেয়, তাদের কাছেও যেতে হবে না। একমাত্র ইভিএমই পারে, ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের নিয়ে যেতে।
ঢাকা সিটি নির্বাচনেই বিরাট বিরাট মিছিল, পোস্টারে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম ৮০ শতাংশ ভোট হবে। কিন্তু উল্টো হলো। মনে হয়, এটা আমার ধারণা যে, প্রার্থীরা ভোটারের কাছে না গিয়ে রাস্তায় গিয়েছে। আসল যে সম্পত্তি- ভোটার, ভোট দেবেন যারা, তাদের কাছে যায়নি, ভোট কম পড়ার এটা একটা কারণ।
ইসি সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন, চার নির্বাচন কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আই.এ/