বিশেষ প্রতিবেদন : শুক্রবার হলো মুমিন মুসলমানের ঈদের দিন। ঈমানদার মুসলমানের ঈমান বৃদ্ধির দিন। সর্বোপরি সপ্তাহের সেরা দিন ইয়াওমুল জুমা বা শুক্রবার। এ দিন আনন্দ-উৎসবের সঙ্গেই ছোট থেকে বড় সবাই জুমার নামাজ আদায় করতে মসজিদে হাজির হয়। জুমার নামাজ মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা তুলে ধরে সমগ্র বিশ্বের সামনে।
যেভাবে এলো জুমাবার : প্রথম হিজরি সন। নবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদিনা গেলেন। নবী (সা.) এর মদিনায় পৌঁছার দিনটি ছিল ইয়াওমুল আরুবা (শুক্রবার)। সেদিন তিনি বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় গেলে জোহর নামাজের সময় হয়। সেখানে তিনি জোহর নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ।
তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর মদীনায় যাওয়ার পর একবার মদীনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা বললেন, ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যে দিনে তারা সবাই একত্রিত হয়। নাসারারাও সপ্তাহে একদিন একত্রিত হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব। অতঃপর তারা আলোচনায় বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন (সীরাতুল মুস্তাফা ও দারসে তিরমিজি)।
জুমা নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল হয়েছে। জুমার নামাজের কথা সরাসরি আল্লাহর বাণীতে উল্লেখ হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমুআ, আয়াত : ১০) মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
‘হে মুমিনগন, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তোমরা আল্লাহর স্মরণে তরা করো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝ।’ (সূরা: জুমা, আয়াত: ৯) হাদিসেও জুমার নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। ঘোষিত হয়েছে তা আদায়কারীদের জন্য অনেক পুরস্কার।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গমন করল, পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো কথা বলল না, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। -মুসনাদে আহমাদ : ৫৮১
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমরা শেষে এসেছি কিন্তু কেয়ামতের দিন সকলের আগে থাকবো। যদিও অন্য সব জাতিকে (ইহুদি ও খ্রিস্টান) গ্রন্থ দেয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে, আমাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের পরে। অতঃপর জেনে রাখো এ দিনটি আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন। আর অন্য লোকেরা এ ব্যাপারে আমাদের পেছনে আছে। ইহুদিরা জুমার পরের দিন (শনিবার) উদযাপন করে আর খ্রিস্টানেরা তার পরের দিন (রোববার) উদযাপন করে।’ (সহিহ মুসলিম : ৮৫৬)
জুমার দিনে হাদিসে বর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো হলো : ১. গোসল করা। ২. ফজরের ফরজ নামাজে সূরা সাজদা ও সূরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা। ৩. উত্তম পোশাক পরা। ৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা। ৫. আগেভাগে মসজিদে যাওয়া। ৬. সূরা কাহফ তেলাওয়াত করা। ৭. মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে ৪ রাকাত সুন্নত আদায় করা। ৮. ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা। ৯. মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনা। খুৎবা চলাকালে কোনো কথা না বলা। ১০. দুই খুৎবার মাঝের সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা। ১১. অন্য সময়ে দোয়া করা। কারণ এদিন দোয়া কবুল হয়। ১৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সারাদিন যথাসম্ভব বেশি দরূদ পাঠ করা। ১৪. জুমার রাত (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত) ও জুমার দিনে নবী করিম (সা.) এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠের কথা বলা হয়েছে।
যে ব্যক্তি জুমার দিন রাসুলের সকল সুন্নত পালন করবে তার মসজিদে যেতে যতগুলো কদম ফেলতে হয় প্রতিটি কদমে আল্লাহ তাআলা তাকে এক বছর নফল ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। (হাদিস শরীফ)
মুসলমানদের জন্য পবিত্র এই দিনটি সম্পর্কে আরও অনেক সুন্দর ঘোষণা রয়েছে :
(ক) সর্বোত্তম দিন: জুমার দিন সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে সর্বোত্তম দিন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সূর্য উদয় হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্ত দিন জুমার দিন। এদিন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। এদিন তাকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। এদিনই কিয়ামাত সংঘটিত হবে। (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)
(খ) মুসলমানদের মিলন মেলার দিন: এ দিনটির মধ্যে জুমার নামাজ রয়েছে যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সমগ্র মুসলিম মিল্লাতের মিলনমেলার দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো কারণ ছাড়া জুমার নামাজ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। (মুসলিম)
(গ) চাওয়া-পাওয়া কবুল হওয়ার দিন: জুমার দিনে একটি মুহূর্ত রয়েছে যে মুহূর্তে দোয়া করলে মহান আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন। তবে মুহূর্তটিকে অজ্ঞাত করে রাখা হয়েছে। যাতে মানুষ পুরো জুমার দিনটিকে গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধান করতে থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো বান্দাহ ঐ মুহূর্তে দাড়িয়ে সালাতরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কোনো কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ তায়ালা তা অবশ্যই দিবেন। (বুখারি ও মুসলিম)
(ঘ) সাদকা করার উত্তম দিন: অন্যান্য দিনের তুলনা জুমার দিন সাদকা করা তেমন উত্তম, যেমন সারা বছর সাদকা করার চেয়ে রমজানে সাদকা করা উত্তম। কা`ব ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, ‘জুমার দিনই সাদকা করা অন্যান্য দিন সাদকা করার তুলনায় অধিক ছাওয়াব ও গুরুত্বপূর্ণ।’ (মুসলিম)
(ঙ) মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের দিন: জুমার দিন জান্নাতীদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সাক্ষাৎ করবেন। তাফসিরে এসেছে- আল্লাহ তায়ালা প্রতি জুমার দিন জান্নাতিদের সাক্ষাতের জন্য প্রকাশ্যে আসেন।
(চ) মুসলমানের সাপ্তাহিক ঈদের দিন: হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এটি ঈদের দিন। আল্লাহ তায়িালা মুসলমানদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি জুমার নামাজে উপস্থিত হয়, সে যেন ওজু করে উপস্থিত হয়। (ইবনু মাজাহ)
(ছ) গুনাহ মাফের দিন: এদিন আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোলস করল, যথাযথ পবিত্রতা অর্জন করল, তেল লাগাল এবং ঘর থেকে আতর খুশবু লাগিয়ে বের হল, দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে গেল না। অতপর তার তকদিরে যত নামাজ পড়া নির্ধারিত ছিল তা পড়ল, ইমামরে খুতবার সময় চুপ থাকল, তাহলে তার এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহসমূহ মাপ করে দেয়া হবে। (বুখারি)
(জ) নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের ছাওয়াব লাভ: জুমার দিনের প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে ছাওয়াবের ভাণ্ডার। যারা যথাযথ আদব রক্ষা করে জুমার সালাত আদায় করে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তাদের জন্য পুরো এক বছরের রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব লিখা হয়। হজরত ইবনে আউস আস সাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিন যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, আগে আগে মসজিদে যায় এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য ছাওয়াব।’ (মুসনাদে আহমাদ)
(ঝ) জাহান্নামের আগুন প্রজ্জলিত করা বন্ধ রাখার দিন: এ দিন জাহান্নামের দিনকে প্রজ্জলতি রাখা বন্ধ রাখে। যাদুল মাআ`দে এসেছে- সপ্তাহের প্রতিদিন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়। জুমার দিনের সম্মানে এদিনকে প্রজ্জলিত করা বা উত্তপ্ত করা বন্ধ রাখা হয়।
(ঞ) জুমার দিন বা রাত্রিতের মৃত্যু বরণ শুভ লক্ষণ: এ দিন বা রাত্রিতে মৃত্যু বরণ করা উত্তম পরিণতির লক্ষণ। কারণ এদিন বা রাত্রিতে যে ব্যাক্তি মারা যায় সে ব্যক্তি কবরের আজাব বা মুনকার নকীরের প্রশ্ন থেকে বেঁচে যায়। হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে কোনো মুসলিম জুমার দিন বা জুমার রাতে মারা গেল; আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তাকে কবরের আজাব থেকে রেহাই দেবেন। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)
জুমার দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা ও ফজিলত: সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে জুমার আগে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে মহান আল্লাহ পাক তার জন্য জুমার মাঝের সময়টা নূর দ্বারা ভরিয়ে দেয়। (বায়হাকী শরীফ)
পবিত্র জুমার দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াতের ফজিলত : পবিত্র কোরআনুল কারিমের ১৮ নম্বর সূরা ‘সূরা কাহাফ’। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ১১০। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এ পুর্ণাঙ্গ সূরাটি এক সঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফিরিস্তা দুনিয়াতে আগমন করেছেন।
ফজিলত: হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ থাকবে। তার থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস্ত করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে। হজরত সাহাল ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায়। আর যে পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ)
জুমাআর দিন তিলাওয়াতের ফজিলত : হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর হবে।
হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গুনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য যে, কবিরা গুনাহ তওবাহ করা ছাড়া মাফ হয় না।
জুমার নামাজ না পড়ার শাস্তি: হাদিসে জুমার নামাজ না পড়ার প্রতি রাসূল (সা.) ভীতি প্রদর্শন করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা করে তিন জুমার নামাজ পড়ে না, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।’ (তিরমিজি : ৫০২)।
আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রয়োজন ব্যতিরেকে জুমার নামাজ তরক করে তার নাম এমন কিতাবে মোনাফেক হিসেবে লেখা হয়, যার লেখা মুছে ফেলা যায় না এবং তা পরিবর্তিতও হয় না।’ (মেশকাত : ১২৯৭)।