
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর দেওয়া বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।
ফিরোজ রশীদ ইনুর বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পথ তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তবে ক্রস ফায়ারের প্রশ্নে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ফিরোজ রশীদ।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টানা ৩০ মিনিট বক্তৃতা করেন ফিরোজ রশীদ। এ সময় তিনি জাসদ ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কঠোর সমালোচনা করেন।
এর আগে গত রবিবার রাতে একই আলোচনায় অংশ নিয়ে ধর্ষকদের শাস্তি ক্রসফায়ার দেওয়ার প্রস্তাবের সমালোচনা করেন হাসানুল হক ইনু। অবশ্য সংসদে আরেক বক্তব্যে কাজী ফিরোজ রশীদ ধর্ষকদের শাস্তি ক্রসফায়ার দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
ক্রসফায়ার প্রশ্নে জাপা নেতা ফিরোজ রশীদ বলেন, সেদিন অত্যন্ত আবেগ তাড়িত হয়ে ধর্ষকদের ওপর গুলি চালানোর কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের এখান থেকেই একজন সংসদ সদস্য (হাসানুল হক ইনু) এটার বিরাট ফিরিস্তি দিলেন। যে এইটা মহাপাপ। আমরা এখানে সেটা আলোচনা করতে পারি না।
তিনি বলেন, আমি চাই, ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করতে কঠোর আইন করা হোক। তা না হলে সাক্ষি নেই, কেউ সাক্ষি দিতে চায় না। এক শতাংশ ধর্ষকেরও বিচার হয় না। সাক্ষির অভাবে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা হয়। এজন্য চাই একটা তড়িৎ ব্যবস্থা করতে। কিছু মানবাধিকার কর্মী বাইরে বলছেন, কেন সংসদে ধর্ষকদের গুলি করার কথা বললাম। এনিয়ে অনেকে বাহাস করেছেন। কিন্তু আমি ওইভাবে মিন করিনি।
জাসদকে উদ্দেশ্য করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের কত লোক গুলি করে মেরেছিলেন? হাজার হাজার কর্মীকে মেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। থানা, ফাঁড়ি লুট করেছিলেন। সেদিন যদি আপনারা এগুলো না করতেন, বঙ্গবন্ধুকে মারার দুঃসাহস কেউ করত না। আপনারা বঙ্গবন্ধুকে মারার পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। এখন উনি (ইনু) গুলির বিরুদ্ধে কথা বলেন।
মুজিব বর্ষে গ্রাম বাংলার সকল রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, স্কুল-কলেজ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করার দাবি জানিয়ে জাপা নেতা বলেন, এটা করলে আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে বঙ্গবন্ধুর ডাকে কারা সেদিন মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল। ইতিহাস থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অনেক উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু উন্নয়নের সফলতা ম্লান হয়েছে আর্থিকখাতে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে। সব থেকে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে ব্যাংকিং খাতে। এই খাতে একটা হরিলুট হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
আই.এ/