
ইরাকে নিজেদের প্রশিক্ষণ মিশন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। ইরাকে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলায়মানি নিহতের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাটো জোট। জোটের একজন মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইরাকে ন্যাটো মিশনে এ বাহিনীর শতাধিক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আইএসের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে বাগদাদের অনুরোধে তারা ইরাকি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এদিকে এ হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর ওপর হুমকি বাড়তে থাকায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এসব সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুদ্ধ শুরু করতে নয়; বরং তা থামাতেই কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিজের মালিকানাধীন ফ্লোরিডার বিলাসবহুল মার-এ-লাগো রিসোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তবে ইরানি কমান্ডারকে হত্যার পর একে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে নতুন যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি শুক্রবার ভোরে বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে জেনারেল সোলায়মানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের নির্দেশেই ইরানের এ সামরিক কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ইরানি সামরিক কমান্ডার আমেরিকানদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিলেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সোলাইমানি আমেরিকান কূটনীতিক ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার চক্রান্ত করছিল। কিন্তু আমরা তাকে খতম করে দিয়েছি। যুদ্ধ থামাতে আমরা এ ব্যবস্থা নিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরকার পরিবর্তন করতে চায় না বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।
মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতিতে ইরানের শক্তি বৃদ্ধির প্রধান কারিগর মনে করা হয় এই জেনারেল কাসেমিকে। তিনি দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সবচেয়ে প্রভাবশালী কমান্ডার ছিলেন। সিরিয়া ও ইরাকে ইরানের স্বার্থ রক্ষায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। গত অক্টোবরেও তাকে হত্যাচেষ্টা বানচাল করে দেওয়ার দাবি করে তেহরান।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের দাবি, ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মী ও কূটনীতিদের ওপর হামলার সক্রিয় পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। গত সপ্তাহ বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলাও তার নির্দেশেই হয়েছিল। ভবিষ্যতে ইরান যেন আরও হামলার পরিকল্পনা করতে না পারে সেজন্যই সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে।
আই.এ/