পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫ পেয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান। মানিক ২০১৯ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তার ভালো ফলাফলে খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। পরীক্ষায় কৃতিত্বের মাধ্যমে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্নপূরণে একধাপ এগিয়ে গেলো মানিক।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার তার এ সাফল্যের বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার বলেন, মানিক প্রাথমিক সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ (গোল্ডেন) পেয়েছে। তার ভালো ফলাফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আমরা সবাই আনন্দিত। তার দু’হাত না থাকলেও পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ অর্জন এটা সত্যিই অনুসরণীয় ও বিদ্যালয়ের জন্য সুনামের। সে আবৃত্তি ও গানেও পারদর্শী।
শিক্ষার্থী মানিক রহমান বলেন, ‘আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহ রহমতে পা দিয়ে লিখে এবারের জেএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন সামনে আরও ভালো করতে পারি।’
হাত না থাকলেও মনোবল হারাইনি। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলাফলের মাধ্যমে বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণ করে যেন তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি সেই কামনা করি।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মানিক প্রতিবন্ধী। তার কষ্টার্জিত ফলাফল আমাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায়। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে মানিকের মা ও আমি তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিকের ভালো রেজাল্টে করায় আমরা গর্ববোধ করি।
আই.এ/