
বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়েই ভারতের ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এখনও জনসভায় বক্তৃতা রাখতে গেলে তার সভাজুড়ে মোদি-মোদি রব ওঠে। হাততালিতে ফেটে পড়ে ময়দান। কিন্তু, সম্প্রতি ঘটল ব্যতিক্রম ঘটনা। বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলছে সদ্য পাস হওয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তীব্র আন্দোলন। এই আন্দোলনে বিভিন্ন রাজ্যে এরই মধ্যে ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
বলা যায়, এই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গোটা ভারতেই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। আর এর মধ্যেই বক্তৃতা চলাকালীন হাততালির পরিমাণ কম হওয়ায় খানিকটা বিরক্ত হলেন মোদি। বক্তব্য মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে তিনি বলে উঠলেন, ‘হাততালিতে দম কোথায়। আপনারা মনে হয় আমার কথা ঠিক করে শুনছেন না।’ শুক্রবার ভারতের অন্যতম বড় বণিকসভা অ্যাসোচেমের বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখছিলেন মোদি।
দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে মোদির সেই বক্তৃতার দিকে নজর ছিল গোটা দেশের শিল্প মহলের। অর্থনীতিকে বেহাল দশা থেকে সঠিক অবস্থানে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। মোদি এলেন, স্বীকার করলেন অর্থনীতিতে ওঠানামা থাকে। তবে, বর্তমান দুরাবস্থা দূর করার কোনও ওষুধ তিনি দিলেন না। উল্টো জোর গলায় দাবি করলেন, অর্থনীতি সঠিক দিশায় এগোচ্ছে। দ্রুত আমরা ৫ ট্রিলিয়নের অর্থনীতিতে পরিণত হব।
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘পাঁচ-ছয় বছর আগে দেশের অর্থনীতি রীতিমতো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। আমরা সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে পেরেছি।’ কিন্তু, মোদির এসব কথাতে হয়তো মন গলেনি উপস্থিত ব্যবসায়ীদের। সেভাবে হাততালিও পড়ছিল না প্রধানমন্ত্রীর কথাতে। তাই, বক্তৃতা থামিয়ে কিছুটা হলেও বিরক্তির সুরে মোদিকে অসন্তোষ প্রকাশ করতে হল।
তিনি বললেন, ‘কী ব্যাপার, হাততালির শব্দ এত কম কেন? আমি তো আর একটু হাততালি আশা করছিলাম। আপনারা মনে হয়, অতীতের পরিসংখ্যান এখনও মনে করে রেখে দিয়েছেন। আর না হয় ঠিক মন দিয়ে শুনছেন না আমার কথা। শুনলে আরও বেশি হাততালি পড়ত।’
এরপর অবশ্য পাল্টে যায় চিত্র। এই অসন্তোষ প্রকাশের পর অবশ্য আর হাততালির অভাব পড়েনি। সঙ্গে সঙ্গে জনসভার এক পাশ গর্জে ওঠে করতালির আওয়াজে। তবুও, নরেন্দ্র মোদির মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে অর্থনীতি সংক্রান্ত বক্তৃতায় হাততালি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে হচ্ছে। সেটাই কি কম উদ্বেগের বিষয়?
আই.এ/