ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন রাজ্যের সাথে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। দিল্লিতে বিভিন্ন স্থানে কড়া প্রতিবাদ হচ্ছে এই বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে। প্রতিবাতে শামিল হয়েছে দিল্লির বিখ্যাত জামিয়া মিল্লিয়া (মিল্লিয়া ইউনিভার্সিটি) কিন্তু দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা অনুমতিতে পুলিশ প্রবেশ করে ছাত্র ছাত্রীদের বেধড়ক মারধর করতে দেখা গেছে। এই অভিযোগ নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।
জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ প্রক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, বিনা অনুমতিতে জোর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঢুকে ছাত্রদের উপরে নির্মম অত্যাচার করে পুলিশ। শুধু তাই নয় জোর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে ছাত্র এবং কর্মীদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সামনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানিয়েছেন, জামিয়া ক্যাম্পাসে ঢোকার জন্য দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারপরেও জোর করে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েছিল পুলিশ। শুধু তাই নয় ক্যাম্পাসের সব জায়গা তল্লাশি করতে শুরু করেছিল বলেও অভিযোগ। পুরো ঘটনায় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, নাগরিকত্ব আইন এর বিরোধিতা করে দিল্লির রাস্তায় মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও জলকামানের মুখোমুখি হয় দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বের হলে তাদের হঠাতে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে দিল্লি পুলিশ। এরপরই পুলিশের সাথে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এসময় ছাত্ররা পুলিশেল টিয়ারশেল থেকে বাচকে বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগও করে।
জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া’র এক শিক্ষার্থী জানান, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ধারণা করেছিলো সর্বোচ্চ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষার্থী-জনতা মিলে তা হাজারের বেশি।
সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে পাস হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। নতুন পাস হওয়া আইনে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিসহ অমুসলিম অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেখানে মুসলমানদের কেবলমাত্র নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও মোদি সরকার। এ আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। বিতর্কিত এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর প্রতিবাদে রবিবারও বিক্ষোভে উত্তাল ছিলো রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। শনিবার দিন ভর বিক্ষোভের পর এ দিনও সকাল হতেই রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। দফায় দফায় সড়ক ও রেল অবরোধ শুরু হয়।