নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সব মহলে আলোচনা একটাই, বিএনপি এখন কী করবে? বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের যে কয়জন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা শপথ নেননি। রাজপথেও দৃশ্যত কোনো কর্মসূচি নেই। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে যে কী করতে চলেছে বিএনপি? তবে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপি যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামতে চায়, তা হলে আগে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি পুনর্গঠন জরুরি। এ ক্ষেত্রে প্রথাগত কমিটি গঠন থেকে বেরিয়ে এসে কাউন্সিলে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এসব সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণের দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
তাদের মতে- খালেদা জিয়া যাদেরকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচিতে ‘নিষ্ক্রিয়’। ফলে সংগঠনের তৃণমূলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অতীতে যেসব কর্মসূচি পালিত হয়েছে তাতে ঘুরে ফিরে পরিচিত মুখগুলোই দেখা গেছে।
৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি অনেকটাই স্তিমিত। তৃণমূলের হতাশা দূর করতে দলের হাইকমান্ডকে দ্রুত নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকায় আগামী দিনের করণীয় নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করতে হবে দলটিকে। সেইসঙ্গে দলের প্রাণশক্তি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা সফরের বিকল্প নেই।
বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে বিএনপির যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। বিএনপির ১১টি অঙ্গসংগঠনের হ-য-ব-র-ল দশা। অধিকাংশ সংগঠনের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। মানা হচ্ছে না চেইন অব কমান্ড। দলের মধ্যে মতবিরোধ ও অসন্তোষ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি হাইকমান্ডকে নতুন কমিটি গঠনের চিন্তা করতে হবে। কেন্দ্রীয় ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সংগঠনগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে।
জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির ৩টি পদ এখনও শূন্য। আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার ও তরিকুল ইসলাম মারা গেছেন। বেগম খালেদা জিয়া প্রায় ১ বছর কারাবন্দী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে। কয়েকজন সদস্য গুরুতর অসুস্থ। দীর্ঘদিন মামলা জটিলতায় ভারতে রয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। অন্যরা সভা-সমাবেশে অংশ নিলেও মিছিলের অগ্রভাগে থাকেন না। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ৭৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৫ জন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব একজন ও যুগ্ম মহাসচিব ৭ জন। বিভিন্ন বিষয়ে সম্পাদকীয় ১৬৩টি পদের মধ্যে ৫টি শূন্য। নতুন পুরাতন মিলে নির্বাহী কমিটির সদস্য ২৯৩ জন। বিএনপির চলমান কর্মসূচিগুলোতে এই বিশাল কমিটির অর্ধশতাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকেই ঘুরে ফিরে দেখা যায়।