
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের তৃতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ৩টায় এ শুনানি শুরু হয়। এদিন উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন আদালত। স্থানীয় সময় সকালে অভিযোগকারী দেশ গাম্বিয়ার পক্ষে আইনজীবীরা যুক্তি খণ্ডন করবেন। এদিন বিকেলে মিয়ানমারের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি খণ্ডনের সুযোগ পাবেন।
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আইসিজেতে উপস্থিত হয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের তিন প্রতিনিধি আদালতে গিয়েছেন। তারা আদালতে নিজেদের ওপর হওয়া নিপীড়নের বর্ণনা দেবেন।
গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনে অভিযোগকারী গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী অভিযোগের সারাংশ আদালতে তুলে ধরেন। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করে। মিয়ানমার গণহত্যা, ধর্ষণ এবং সম্প্রদায় ধ্বংসের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের একটি দল হিসাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে গণহত্যামূলক কাজ করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি আদালতে বলেন, আরাকানে কোন গণহত্যা ঘটেনি, সেখানে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে সে দেশের সেনাবাহিনী।
রাখাইনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর হাতে নিরীহ লোকজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী সামরিক আদালতে অপরাধী সেনা সদস্যদের বিচার হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ঘটনায় সেনা সদস্যদের সাজা পাওয়ার কথাও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে জানান তিনি।
কিন্তু এর জন্য আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচার হওয়া অযৌক্তিক বলে দাবি করেন সু চি। সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় অপরাধীদের দ্রুত বিচার চলছে জানিয়ে সু চি বলেন, আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ হলে দোষী সেনা সদস্যদের বিচার প্রক্রিয়া থমকে যাবে। আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার চেয়ে যেকোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিচার প্রক্রিয়া সবসময় দ্রুত সম্পন্ন হয়।
আই.এ/