
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন,ইসলামের দৃষ্টিতে গান-বাজনা করা ও শোনা হারাম। বর্তমান সময়ে বাদ্য-বাজনা চরম আকার ধারণ করেছে। বাদ্য-বাজনা সমাজকে আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিচ্ছে।
মাওলানা হাবীবুল হল বাবুর সঞ্চালনায় ১৭ ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে হাটহাজারী ইসলাম প্রচার সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত হাটহাজারী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেছেন হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
সুরা লোকমানের ৬-৭ নং আয়াতের শানে নুযুল বা অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট ও তাফসীর উল্লেখ করতে গিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, কুরআনের বহু আয়াত ও হাদীস দ্বারা গান বাজনা হারাম হওয়ার সাথে সাথে গান বাজনার ভয়াবহ পরিনতি বর্ননা করা হয়েছে। বর্তমানে গান ও বাদ্যযন্ত্রের বিশাল বাজার তৈরি হয়েছে যাতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, এর সকল উপার্জন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস অনুযায়ী সম্পূর্ণ হারাম।
দুঃখ প্রকাশ করে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, বাংলার যেসব সূর্য সন্তান মুক্তিযুদ্ধারা নিজেদের জানবাজী রেখে এদেশকে স্বাধীন করেছেন এবং কবরবাসী হয়ে গেছেন আজ বিজয় দিবসে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও ঈসালে সওয়াব না করে উল্টো বিজয় দিবস উদযাপনের নামে গানবাজনা করে তাদের রুহের সাথে গাদ্দারী করা হচ্ছে। মৃত ব্যক্তিদের জন্য গানবাজনা নয় বরং বিভিন দুআ দরূদ কুরআনের আয়াত পড়ে ইসালে সওয়াব বা সওয়াব পৌছানোই হলো ইসলামের বিধান।
তিনি আরো বলেন, একশ্রেণীর মূর্খ মানুষ আজ শরীয়ত আর তরীকতের নাম দিয়ে গানের আসর বসিয়ে গানবাজনা জায়েজ বলে সরলমনা সাধারণ মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে ঈমান হননের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসলামে গানবাজনা হারাম, গানের সাথে শরীয়ত তরীকত যাই লাগানো হোক তা কখনো জায়েজ হতে পারে না। শরীয়ত ত্বরীকতে ইবাদাত আছে, নামায আছে, জিকির আছে কিন্তু গানবাজনা বলতে কিছুই নেই। শরীয়ত ত্বরীকতের নবী রহমাতুল্লিল আলামিন সা.কে প্রেরণ করা হয়েছে গানবাজনাকে উৎখাত আর নির্মুল করার জন্য।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, হাদীস শরীফে আছে, পানি যেমন (ভূমিতে) তৃণলতা উৎপন্ন করে তেমনি গান মানুষের অন্তরে নিফাক সৃষ্টি করে। গানবাজনার আসরে মানুষ লজ্জাহীন হয়ে পড়ে। মদ পান করে, যিনা ব্যভিচারের মতো জঘন্য পাপে লিপ্ত হয়। গান-বাদ্য বাজনার কারণে যুবক-যুবতীদের চরিত্র নষ্ট হয়।
তিনি আরো বলেন, ক্যান্সার যেমন মানুষের শরীরকে শেষ করে দেয় তদ্রুপ বাদ্য-বাজনা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে শেষ করে দেয়। গানবাজনার কারণে আজ সমাজে বেহায়াপনা বেলেল্লাপনা বাড়ছে। যুব সমাজ গানবাজনায় লিপ্ত হওয়ার কারণে সমাজে আজ ইভটিজিং,নারী নির্যাতন সহ নানান অপরাধ সংগটিত হচ্ছে। তাই শান্তিময় আদর্শ সমাজ বিনির্মানে গান বাদ্য-বাজনা বন্ধ করতে হবে।
মুফতী জসিমউদদীন, মাওলানা আহমদ দিদার কাসেমী, মাওলানা সাইফুল্লাহ হামিদি ও মাওলানা আমিন উল্লাহর ধারাবাহিক সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মাঝে আরো বয়ান করেন, মাওলানা শেখ আহমদ, মাওলানা ড.আ ফ ম খালেদ হোসেন, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, হাটহাজারী উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাসির উদ্দীন মুনির, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন আল মোবারক, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলা ইসমাঈল খান প্রমূখ।
/এসএস