
রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে সাড়ে ৩টার দিকে বিচারকাজ শুরু হয়।
গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবাকর তামবাদাউ তার দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বে রয়েছে মায়ানমার।
প্রসঙ্গ, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে গত ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ ওই মামলার শুনানি আজ (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়ে চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ এই মামলার সরাসরি অংশগ্রহণকারী পক্ষ না হলেও গাম্বিয়ার পক্ষে লজিস্টিক সহায়তা দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকেও একটি প্রতিনিধি দল গেছে। এতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিনিধি দলও রয়েছে। এছাড়া কানাডা বা ওআইসি’র পক্ষ থেকেও প্রতিনিধিরা এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সুশীল সমাজের সদস্যরা শুনানির জন্য হেগ-এ উপস্থিত থেকে তথ্যউপাত্ত দিয়ে সহায়তা করবেন।
গত ১১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ এবং জাতিগত নিধনের জন্য মিয়ানমারকে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যদিও বিশ্লেষকগণ মনে করছেন, আগামী বছরের মিয়ানমারের নির্বাচনকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্যই অং সান সু চি নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আইসিজে-তে অং সান সু চির নেতৃত্বদানকে স্বাগত জানিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিং থুন সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এটি তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ এবং তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য একটি প্রচ্ছন্ন আশীর্বাদ।
/এসএস

