
কানাডা ১০ বছর পর প্রথম ফিলিস্তিনের পক্ষে কোনও জাতিসংঘ প্রস্তাবে ভোট দিল। এর আগে ধারাবাহিকভাবে দেশটি ইসরাইলের পক্ষেই ভোট দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিনের ভূখন্ড দখল করে আসছে। সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ও জায়গা দখলকে বৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন প্রশাসনের এ সম্মতির সমালোচনা করেছেন খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। এতে পোপ ফ্রান্সিস ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন এবং তাদের অবস্থান পরিবর্তনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগের অবস্থান পরিবর্তন করায় মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে।’
এদিকে, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরাইলের এ অবৈধ দখলদারিত্বকে মার্কিন প্রশাসন বৈধতা দেয়ায় কানাডাও তাদের নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছে। দেশটি আগে দখলদার ইসরাইলকে সমর্থন করলেও গত দশ বছরে এই প্রথম কানাডা ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জাতিসংঘ রেজুলোশনে ভোট দিয়েছে। কানাডা মনে করে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। মিডল ইস্ট মনিটর এ খবর জানিয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়া আগামী মাসে ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ এর মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টায় পাঁচটি মুসলিম দেশকে একত্র করার লক্ষ্যে এক সভায় মিলিত হতে যাচ্ছে।
“কুয়ালালামপুর ২০১৯” শীর্ষক সম্মেলন চলতি বছর ১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সামিট উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, শীর্ষ সম্মেলনে মুসলিম বিশ্ব যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, সেসব বিষয়ে আলোচনা এবং সমাধান পেতে মালয়েশিয়া ও চারটি মুসলিম দেশ এক সাথে কাজ করবে। মাহাথির বলেছেন, তুরস্কসহ অন্য চারটি ইসলামি দেশ ‘কুয়ালালামপুর-২০১৯’ শীর্ষক সম্মেলনের অগ্রদ‚ত হবে। মালয়েশিয়ার মতো তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং কাতারের মধ্য যৌথ অনেক সমস্যা বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির বলেন, আমরা আলোচনার জন্য অল্প কয়েকটি দেশ নিয়ে বসতে যাচ্ছি। অনেকগুলো দেশ একসাথে বসলে বিভিন্ন মতানৈক্য সৃষ্টি হতে পারে যা মুসলিম উম্মাহর সমস্যা সমাধানের পথে বাধা হতে পারে। তবে আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো আমাদের সাথে যোগদান করবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বৈঠকের ম‚ল বিষয় হচ্ছে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় সার্বভৌমত্ব অর্জন করা। এই সম্মেলনে ইসলামী বিশ্বের ৪৫০ জন নেতা, রাজনীতিবিদ এবং চিন্তাবিদ অংশগ্রহণ করবেন।
সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান, কাতারের আমির শেখ তামিম হামাদ আল-থানি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেন মাহাথির মোহাম্মদ।
মাহাথির বলেন, অতীতে মুসলমানরা সভ্যতায় ব্যাপক অবদান রেখেছিল। এখন উম্মাহ উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে। আমাদের জানতে হবে কেন ইসলামকে সন্ত্রাসবাদের ধর্ম হিসাবে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং কেন সেখানে ইসলামোফোবিয়া রয়েছে। এর পেছনে অবশ্যই কারণ থাকতে হবে। আমরা স্কলার, নেতা এবং ইসলামি চিন্তাবিদদের দৃষ্টিভঙ্গিতে কারণগুলো জানার চেষ্টা করব, আশা করি সমস্যাগুলি চিহ্নিত করতে সক্ষম হব। আর সেসব সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠার প্রস্তাবও থাকবে। আমরা মুসলমানদের অতীত গৌরব ফিরে পেতে সহায়তা করার প্রথম পদক্ষেপ নিতে পারি, তিনি যোগ করেন।
শীর্ষ সম্মেলনের চেয়ারম্যান ড. মাহাথির বলেছেন, সাতটি বিষয়কে প্রধানত গুরুত্ব দেওয়া হবে। উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব, অখন্ডতা ও সুশাসন, সংস্কৃতি ও পরিচয়, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা, শান্তি-সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা। শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য মুসলিম দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ইসলামী নেতা, বুদ্ধিজীবী, পন্ডিত এবং চিন্তাবিদদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গঠন।
এছাড়া ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করা হবে যা ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আমাদের অবশ্যই কৌশল এবং পরিকল্পনার সাথে মিলিত হতে হবে। মিডল ইস্ট মনিটর, নিউ স্টেইট টাইমস,মালয় মেইল।
আই.এ/