নানা নাটকীয়তা ও উদ্বেগ উৎকন্ঠা পেরিয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসি।
যদিও ভুল স্বীকার করা ও নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে আইসিসিরি বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের শর্তে শাস্তির মেয়াদ ১ বছর কমিয়েছে আইসিসি। কিন্তু তার নিষেধাজ্ঞায় মুষড়ে পড়েছে দেশের ক্রিকেটভক্ত ও সাকিব ভক্তরা।
এবার তার এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এমপি। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘দীর্ঘ ১৩ বছরের সহযোদ্ধার আজকের ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই কিছু বিনিদ্র রাত কাটবে আমার। তবে কিছুদিন পর এটা ভেবেও শান্তিতে ঘুমাতে পারব যে, তার নেতৃত্বেই ২০২৩ সালে আমরা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলব। কারণ নামটি তো সাকিব আল হাসান...!!!’
ফেসবুকে মাশরাফি এই পোস্ট করার ৩০ মিনিটের মধ্যে ৯০ হাজার লাইক এবং প্রায় ৬ হাজার মন্তব্য ও ১০ হাজারবার শেয়ার হয়।
প্রসঙ্গ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছিলো আইসিসি। তবে পুরো ঘটনা স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় এক বছরের শাস্তি স্থগিত করা হয়েছে।
সেই হিসেবে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে থাকতে হবে বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারকে। তিনবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও না জানানোয় তার বিরুদ্ধে এ শাস্তির ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
মঙ্গলবার বিকেলে আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু) থেকে এ ঘোষণা আসে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আইসিসির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
আইসিসির ওয়েবসাইটের এক খবরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দু’বছরের জন্য সমস্ত ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে, যার এক বছরে বরখাস্ত (স্থগিত) করা হয়েছে। এবং সেটা আইসিসির দুর্নীতি দমন আইন লঙ্ঘনের তিনটি অভিযোগ স্বীকার করার পরে।
আকসুর কাছে স্বীকারোক্তিতে সাকিব আল হাসান বলেন: ‘আমি যে খেলাটি পছন্দ করি তাতে নিষেধাজ্ঞার কারণে আমি অবশ্যই অত্যন্ত দুঃখিত। তবে নিয়ম অনুযায়ী ফ্রিক্সিং পাওয়ার প্রস্তাবের প্রতিবেদন না দেওয়ায় আইসিসির এ সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিয়েছি’।
২০১৮ সালে ঢাকায় বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের ত্রিদেশীয় সিরিজ ও আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বিষয়গুলো আইসিসিকে না জানানোয় তাকে এ শাস্তি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে ওই সময় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন সাকিব। পরে তার ফোন কল ট্র্যাক করে ঘটনার সত্যতা পায় দুর্নীতি দমন ইউনিট।
আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার অ্যালেক্স মার্শাল এ ব্যাপারে বলেন, ‘সাকিব আল হাসান একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তিনি অনেকগুলি শিক্ষামূলক অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন এবং কোডের আওতায় তাঁর বাধ্যবাধকতাগুলি জানেন। এই পদ্ধতির প্রতিটি তার জানা উচিত ছিল।
আইসিসির আইন অনুযায়ী, বাজিকররা কোনো ক্রিকেটারকে ম্যাচ পাতানোর অফার করলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে আকসুকে জানাতে হয়। এটা গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক্ষেত্রে ৬ মাস থেকে ৫ বছরও আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে পারেন ক্রিকেটার।
/এসএস