
আজ বিপ্লব চন্দ্র শুভ-ই শুধু নয় এমন অনেক বিপ্লবই আছে যারা প্রতিনিয়ত বিশ্বনবীর শানে কূটক্তি করে যাচ্ছে। একজন পূতপবিত্র নবীর নামে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যাচ্ছে। নবী, সাহাবী ও তাঁদের পরিবার নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিআর নিয়েও ব্যঙ্গাত্মের চরম সীমা অতিক্রম করে ফেলছে। এরপরও একজন মুসলিম হয়ে আমি নীরব।
নবীর অপমানে যেখানে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে যাবার কথা সেখানে আমার একটু ব্যথাও অনুভূত হয় না। নবীপরিবার নিয়ে কুৎসা রটনাকারীর গলা কেটে ফেলা-ই যেখানে ইমানের দাবি সেখানে আজ আমার মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হচ্ছে না। যেন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছি।
কারণ, আমি তো অমুক দল করি। তাই কিছু বললে দলের বদনাম হবে। হয়তো দল থেকে বহিষ্কারও করতে পারে। এ ভয়ে চুপ থাকি। কিন্তু ভুলে যাই দল থেকে ধর্ম বড়। দলের আগে ধর্মকে প্রাধান্য দিতে হবে। দলীয় আইন আর ধর্মীয় আইনে সাংঘর্ষিক হলে দলীয় আইনের যতটুকু সাংঘর্ষিক হবে ততটুকু থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। এটাই ইসলাম।
শুধু তাই নয় আমি প্রশাসনের লোক বলেও স্বধর্মের পক্ষে কিছু বলতে পারি না। ওপর থেকে বাধা আসে। বললে হয়তো চাকুরী চলে যাবে নয়তো গুম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। কিন্তু এখানেও আমি ভুলে যাই আমার চাকুরী বাঁচানোর চেয়ে ধর্ম বাঁচানো আগে। ধর্মরক্ষায় একটা কেন হাজারটা চাকুরি গেলেও আমার আফসোস থাকার কথা নয়। আর রইল গুমের কথা! ইসলামের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে শুধু গুম কেন খুন হয়ে গেলেও তাই করতে হবে।
যিনি আমাকে জীবন দিয়েছেন, শ্বাস নেবার শক্তি দিয়েছেন, রক্ত সঞ্চালনের পথ সুগম করে দিয়েছেন, মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়েছেন, বিবেক ও বুদ্ধি দিয়েছেন, হাপ-পা-চোখ-কানসহ শরীরের প্রতিটা অঙ্গ না চাইতেই দান করেছেন সেই মহান সত্তার রাহে, সেই মহান দাতার পথে, সেই মহাশক্তিধরের মার্গে তাঁরই প্রদত্ত জীবন বিলিয়ে দিতে পিছুটান থাকার তো কথা নয়!
মনে রাখতে হবে, ইসলামের বিরুদ্ধাচারণকারী, অবমানকারী, কুৎসা রটনাকারী ও কূটক্তিকারী সে যে-ই হোক না কেন সেই আমাদের শত্রু। ইসলামের ইতিহাস এটাই শিক্ষা দেয়। হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় পুত্র আব্দুর রহমানকে কেবল ইসলাম বিরোধিতার জন্যই বলেছিলেন- যদি তুমি বদর যুদ্ধে আমার তরবারির সামনে আসতে তাহলে আমি তোমাকে কতল করে ফেলতাম।
কিন্তু আল্লাহপাক আব্দুর রহমানকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় দিবেন বলেই সেদিন তাঁর সামনে আনেননি। কিন্তু এ থেকে শিক্ষা এটাই যে, ইসলামের বিপক্ষে অবস্থানকারী যদি কলিজাতুল্য সন্তানও হয় তাহলেও তার সাথে আপোষ নেই। আর দল বা দলের নেতা তো দূরের কথা! আর এ শিক্ষাটা যে আত্মস্থ করতে না পারবে সে তার পরিণাম ইহজগতেই দেখে যেতে পারবে।
দল তোমাকে ততক্ষণ সাপোর্ট দিবে যতক্ষণ তোমাকে দিয়ে তার স্বার্থ হাসিল হবে। স্বার্থে ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে দল থেকে বহিষ্কার করতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করবে না। এটাই প্রতিয়মান হচ্ছে। সুতরাং দলীয় সামান্য সুযোগ-সুবিধার আশায় ইসলামের বিপক্ষে গিয়ে পরকালের অসামান্য সুযোগ-সুবিধা বিনষ্ট করা মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়।
মুহাম্মাদ আরিফ রব্বানী
শিক্ষার্থী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী।