পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারতীয় সেনারা যদি কাশ্মীরে দমনাভিযান অব্যাহত রাখে তাহলে সেটা শুধু কাশ্মীরিদের নয় ভারতের অন্য অঞ্চল ও গোটা বিশ্বের মুসলিমদের চরমপন্থার দিকে ঠেলে দেবে। শুক্রবার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে এক জনসভায় তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে কালকের ওই জনসভায় ইমরান খান বলেছেন, ‘প্রথমত আমি ভারতকে বলতে চাই আপনাদের সেনারা কাশ্মীরে যে দমনাভিযান চালাচ্ছে তা চরমপন্থাকে উষ্কে দেবে। যেসব মানুষকে আপনাদের স্বৈরশ্বাসনের শিকার হতে হচ্ছে তারা যেকোনো উপায়ে এর বিরুদ্ধে লড়বে।’
মুজাফফরাবাদের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কে এইচ খুরশিদ স্টেডিয়ামে ইমরানের জনসভায় নারী, শিক্ষার্থীসহ হাজারো সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিল। তারা সবাই ভারত বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল। তাদের মধ্যে অনেককে হাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের পতাকা নিয়ে র্যালি করতে দেখা গেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাশ্মীরে ভারত যা করছে তা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো। শুধু কাশ্মীরের মানুষ নয় ভারতের অন্য অঞ্চলের এবং একইসঙ্গে গোটা বিশ্বের মুসলিমকে এর কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি ভারতকে বলতে চাই যে, হাজার হাজার মানুষকে আটক করে আপনারা মানুষকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠবে। আর কেবল ভারতের মুসলমানরাই নয়, বিশ্বজুড়ে ১২৫ কোটি মুসলমান আছে। তারা সবাই এসব দেখছে।’
ইমরান খান বলেন, ‘কাশ্মীরের ২০ বছর বয়সী যে ছেলেটা ভারতীয় সেনাবহনকারী গাড়িতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে সে তো তাদের সেনাদের কাছ থেকে অকথ্যভাবে নির্যাতিত হওয়ার কারণে। কিন্তু ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্বরতা যখন চরমে পৌঁছে যায় তখন মানুষ এ অপমানজনক জীবনের চাইতে মৃত্যুকে বেছে নেয়াটাই শ্রেয় মনে করে। তাই উঠতি বয়সী একটা তরুণ তার মতো করে ভারতের এমন দমনপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটা তাদের মনের ভেতরের ক্ষোভ। এতে কোনো ইন্ধনের প্রয়োজন হয়নি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে ইমরান খান বলেন, ‘আপনি যখন বলেন ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য তখন আপনি ভারতের ২২ কোটি মুসলিমকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দেন।’ মানুষের এমন শ্রেণীবিভাজন তাদেরকে মৌলবাদী হতে উস্কে দেয় বলে জানান তিনি। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বিশ্বের ১২৫ কোটি মুসলিম কাশ্মীরের যে পরিস্থিতি দেখছে তারাও চরমপন্থার দিকে যাবে। যদি গোটা বিশ্ব যদি নীরব দর্শকের মতো আচরণ করে তাহলে এসব মুসলিম বন্দুক কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হবে।’
আই.এ/পাবলিক ভয়েস