
সাব্বির আহমেদ, ববি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ''রোহিঙ্গা ইস্যু, ঐতিহাসিক শেকড় সন্ধান ও সমকালীন বাস্তবতা '' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধুমাত্র বাংলাদেশ কিংবা মায়ানমার সংকট নয় এটি একটি বিশ্ব সংকট। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে বিভিন্ন ভিজুয়াল ডকুমেন্টুরির মাধ্যমে মিয়ানমার এর বর্বরতা তুলে ধরেন এবং একে "Atrocity Crimes" হিসাবে আখ্যায়িত করেন। কারণ ১৮লক্ষ রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান তার মধ্যে বাংলাদেশে ১১-১২ লক্ষ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।
রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের যে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিলো মায়ানমারে, সেটি পরে প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে বিতাড়িত করার জন্য হত্যা, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন নির্যাতন করে আসছে দেশটি। মায়ানমার সরকারের উদ্দেশ্য সংখ্যালঘু (অধিকাংশ মুসলিম) রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করে ভূমি দখল করা।
পাকিস্তান যেমন আমাদের উপর খুন,ধর্ষণ ও নির্যাতন চালাতো ভূমি দখল করার জন্য ঠিক তেমনি মায়ানমারও ভূমি দখল করার জন্য রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন করেছে। বাংলাদেশেকে প্রশংসা করে বলেন, ২০১০ সালের মোট ২৪টি জাতিকে স্বীকৃতি প্রদান করেন পরবর্তীতে অর্থাৎ ২০১৫ সালে স্বীকৃতি দেন ৫০টি জাতিকে যা এক মহান দৃষ্টান্ত কিন্তু মায়ানমার ১৩৫টি জাতির মধ্যে মাত্র ৮টি জাতিকে স্বীকৃতি দেন যা একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে কখনো কাম্য নই। তিনি বলেন একটি দেশে নানা জাতি,ধর্মের মানুষ বসবাস করতেই পারে তাতে সাম্প্রদায়িকতার স্থান দেওয়া উচিত নয়, অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ''মায়ানমার অদ্ভুত নাগরিকত্ব আইন করেছে''। রোহিঙ্গাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে তারা মায়ানমারের স্বাধীনতার সময় বৃটিশদের পক্ষে ছিল, এইজন্য তাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না। তারা বলে মিয়ানমারের সমস্ত ব্যর্থতা রোহিঙ্গাদের জন্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তেমনি যদি বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্র গুলো রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ায় তবে এই সংকট দূর করা সম্ভব।
উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহাবুব হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. মোঃ মুহসিন উদ্দীন।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন ড. মু. আব্দুল বাতেন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগ।