
নাহিদুজ্জামান, বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মুখতার এলাহী হল চালু থাকলেও প্রায় ২ মাস ধরে ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ডাইনিং বন্ধ থাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে হলের অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে।
ডাইনিংয়ে স্থায়ী কর্মচারী না থাকা এবং শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ডাইনিং ব্যবহার না করার কারণেই ডাইনিং ঠিকভাবে চলছে না বলে জানা গেছে। তবে বিষয় দুটোর সমাধান হলেই ডাইনিং নিয়মিত চলবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে প্রায় ২ মাস ধরে ডাইনিং বন্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ক্যাফেটেরিয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ের হোটেল গুলোতে গিয়ে খেতে হচ্ছে এই হলের শিক্ষার্থীদের। এতে করে বেশি অর্থ খরচের ভোগান্তির পাশাপাশি হোটেলের নিম্নমানের খাবার খেতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে স্থায়ী কর্মচারী না থাকায় দিন মজুরিভিত্তিক যেসব কর্মচারী কাজ করেন তাদেরও অভিযোগ- ডাইনিং এ কাজ করে মাসিক মাত্র চার হাজার টাকা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। এখানে স্থায়ী চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাছাড়া অন্য দুই হলে দুই-একজন স্থায়ীভাবে কাজ করলেও মুখতার ইলাহী হলের ডাইনিংয়ে কোনো স্থায়ী কর্মচারী নেই বলেও অভিযোগ করেন তারা।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর শহীদ মুখতার এলাহী হলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবী। উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরে ডাইনিং চালু হলেও বারবার বন্ধ হয়েছে মুখতার এলাহী হলের ডাইনিং।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী কর্মচারী না থাকায় দিনভিত্তিক কর্মচারীদের দিয়ে ডাইনিং চালানো হয়। কিন্তু অর্থাভাবে এসব কর্মচারীকে নিয়মিত বেতন দিতে পারে না হল কর্তৃপক্ষ। একজন কর্মচারীকে মাসে ৪ হাজার টাকা হিসেবে দৈনিক ১৩৩ টাকা প্রদান করা হয় যা দিয়ে কর্মচারীদের পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। কর্মচারীদের অভিযোগ-এই সামান্য টাকাও তারা নিয়মিত পান না।
সূত্রে জানা যায়, হলে অবস্থানরত বেশিরভাগ ছাত্র অনাবাসিক, তাই হলের ফান্ডে কোনো টাকা না থাকায় কর্মচারীরা কাজ করার পরও নূন্যতম মজুরী অনিয়মিতভাবে পান। তাছাড়াও যারা হলে বসবাস করেন তাদেরও অনেকে রুমে নিজে রান্না করে খাওয়ার কারনে ডাইনিংয়ে কম মিল চলে। মুখতার এলাহী হলের ডাইনিং কর্মচারী সুজন বলেন, দৈনিক ২৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য তৈরীকৃত খাবার সবাই না খাওয়ায় মাসিক ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার লোকসান গুনতে হয়। এছাড়া হল প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভর্তুকি না থাকায় এত কম বেতন নিয়ে ডাইনিংয়ে কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
সার্বিক বিষয়ে হল প্রভোস্ট (চলতি দায়িত্ব) ফেরদৌস রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি হজ্বের ছুটিতে ছিলাম এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। হলের সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম লাবুর সঙ্গে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রভোস্ট তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পদ না থাকায় হল ডাইনিংগুলোতে স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারছে না প্রশাসন। ফলে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী দিয়ে ডাইনিং চালানো হচ্ছে।
তাছাড়া ছাত্রদের হলগুলোতে অনাবাসিক ছাত্র বেশি বসবাস করায় ফান্ডে অর্থের ঘাটতি আছে। তবে আশা করছি বিষয়গুলো সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
/এসএস