শিশু নির্যাতনের জন্য বাবা-মাকেও আইনের অধীনে আনার পক্ষে মত জানিয়েছেন উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি। শিশু সুরক্ষায় উন্নত বিশ্বে এই ধরনের আইন থাকলেও বাংলাদেশে নেই; এখন তা প্রণয়নের সময় এসেছে বলে শনিবার শিশু আইন নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে মত প্রকাশ করেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।
শিশু সন্তান নিয়ে মা-বাবার প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের এই বিচারক বলেন, ‘অনেক মা-বাবাই তার শিশু সন্তানটিকে সম্পত্তি মনে করেন। শাসনের নামে নির্যাতন করেন। কিন্তু সন্তান কখনও সম্পত্তি নয়। “বিশ্বের অনেক দেশেই অভিভাবকদের এমন নির্যাতন আইন করে বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে শিশুর নিজেরই সুরক্ষা পাবার আইনগত অধিকার রয়েছে। এখন সময় এসেছে মা-বাবাকে আইনের মধ্যে নিয়ে আসার।’
সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ‘ডাইভারশন ফ্রম দ্য পুলিশ স্টেশন আন্ডার দ্য চিলড্রেন অ্যাক্ট ২০১৩’ শিরোনমে এ কর্মশালার আয়োজন করে শিশু অধিকার বিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কমিটি ও ইউনিসেফ। শিশুরা অপরাধ করলে তার বিচারের ক্ষেত্রেও প্রচলিত পদ্ধতি পরিবর্তনের উপর জোর দেন বিচারপতি হাসান আরিফ। তিনি বলেন, ‘শিশুদের ক্ষেত্রে রেস্টিটিউটিভ জাস্টিসকে (সংশোধনমূলক বিচার) বিবেচনায় নিতে হবে। অর্থাৎ শাস্তি না দিয়ে তাদের সংশোধনমূলক পন্থায় নিতে হবে।” কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস (এসসিএসসিসিআর)’র চেয়ারপারসন মোহাম্মদ ইমান আলী।
তিনি বলেন, ‘শিশুরা ক্রাইম করার প্রবণতা নিয়ে জন্মায় না। ক্রিমিনাল (অপরাধী) হয়ে জন্মায় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তারা ক্রাইমে জড়িয়ে যায়। এর জন্য দায়ী কে, সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। “অনেক সময় মা-বাবার সঠিক পরিচর্যার অভাবে শিশু খারাপ পথে চলে যায়। শিশুকে কোর্ট-কাচারিতে পাঠানো সমীচীন নয়, বিকল্প পন্থায় তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।’
আই.এ/পাবলিক ভয়েস