
নাজমুল হাসান, চবি: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০১৯ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে ২৬ আগস্ট সকাল ১০.৩০ টায় চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এম.পি.। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক জনাব আবুল মোমেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রাশেদ-উন-নবী।
প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি. তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের চিত্তে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই জেল জুলুম সহ্য করেও বাঙালিদের স্বাধীকার আদায়ের সংগ্রাম থেকে পিছপা হননি। বাংলার মানুষের প্রতি অসীম ভালবাসা এবং অগাধ বিশ্বাসের ফলে তিনি তাঁর বাসভবনে উল্লেখযোগ্য কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখেননি। তিনি কখনো বিশ্বাস করেননি বাংলার মানুষ কোনদিন তাঁর বুকে গুলি চালাবেন। স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে চির জাগরুক, চির অমলিন ও চির ভাস্বর হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য তনয়া বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে ভিশন-২০৪১ ঘোষণা করেন এবং তা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলেই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে দেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতিতে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখেন তাহলে আগামী ২০৩০ সালেই বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে সামিল হতে সক্ষম হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বিরাজমান শিক্ষার সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি জ্ঞান-গবেষণায় সমৃদ্ধ আধুনিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে তাঁর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে মর্মে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
চবি উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট হায়েনাদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, পরাধীনতার শৃংখল ভেঙ্গে একটি স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বাংলার এই অবিসংবাদিত নেতা বাঙালিদের হৃদয়ে মুক্তির নেশা উজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যে নেশায় তারা জীবনের মায়া তুচ্ছ করে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে হায়েনার দলকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার লাল সূর্য; বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরাজিত হায়নাদের দোসর স্বাধীনতা বিরোধী দেশদ্রোহী ষড়যন্ত্রকারীর দল জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি-রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের সেই অভিলাষ পূরণ হয়নি।
প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তাঁরই সুযোগ্য তনয়া আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃতে বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে উন্নয়ন-সমৃদ্ধিতে এগিয়ে চলেছে। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীদের জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণে বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সকলকেই এগিয়ে আসার আহবান জানান।
পূর্বাহ্নে উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অতিথি এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং শোক র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব মশিবুর রহমান ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. আনোয়ার হোসেনের যৌথ পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মো. জাকির হোসেন, চবি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জনাব ইউনুস গণি চৌধুরী, চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল হুদা, চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ এবং চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব। এ ছাড়াও আলোচনা সভায় চবি বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ, বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।