
কাশ্মীরে অচলাবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএম গুলোতেও টাকা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কাশ্মীরবাসী। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই তাই দোকানগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে খাবার। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ তিনদিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মীরবাসীর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাশ্মিরের বাসিন্দাদের এই দুর্দশা।
কাশ্মীরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ অফিসার জানায়, এক বিক্ষোভকারী যুবক মারা গিয়েছে। সে ঝিলম নদীতে ঝাঁপ দেয় এবং মারা যায়। গোটা জম্মু-কাশ্মীরে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। মোবাইল পরিষেবা, ইন্টারনেট নেই। পিটিআই’কে জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন জানিয়েছে, রাজনৈতিক নেতাসহ ১০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সানা নামে ২৩ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, তার কাছে পাঁচ ছয়জন ব্যক্তি এসে দাবি করেছিলো যে তাদের পরিবার না খেয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মুদির দোকানে যেন মানুষের বন্যা ছিলো। মসলা ও শাকসবজির দোকানেও ছিলো ভীর। হাজার হাজার মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলো। এছাড়া গ্যাস স্টেশনেগুলোতেও ছিলো গাড়ির লম্বা লাইন। ব্যাংকগুলোতেও টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে।
অনেকেই এখন হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছে। আর দরিদ্র গোষ্ঠীর কোনও জমা টাকাও নেই। তবে ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই খাদ্যাভাবের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, কাশ্মীর উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি খাবার মজুদ রয়েছে। অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাকে গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

নীলম উপত্যকার বাসিন্দা প্রৌঢ়া খুরশিদা বেগম। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘দলে দলে মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।” নাবালক চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে বিধবা খুরশিদা অনিশ্চয়তার দিন গুনছেন। খুরশিদার মতোই নীলম উপত্যকার বাসিন্দা সফিক বাট। ছোটখাটো ব্যবসা। তিনি এএফপি-র প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, ‘আমার ভাই থাকেন শ্রীনগরে। গত তিন দিন তার কোনও খোঁজ পাইনি। কোনও যোগাযোগ হয়নি।’ চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে সফিকের মতো আরও অনেকের যাদের আত্মীয়রা রয়েছেন নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পারে। অর্থাৎ ভারতীয় ভূ-খণ্ডে।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস