চলমান কাশ্মীর সংকট নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগানের সাথে পরামর্শ করেছেন এবং নিজ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে এরদোগানকে ইমরান খান বলেন, কাশ্মীর বিষয়ে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘ্নিত হবে। এমন সিদ্ধান্ত উপমহাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করবে। সেজন্য পাকিস্তান কাশ্মীরি জনগণকে রাজনৈতিক, কূটনৈতিকসহ সর্বপ্রকারের সহায়তা দেয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছে।
অপরদিকে কাশ্মীরের চলমান সংকট নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও ইমরান খানকে ফোন করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে কিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর পাকিস্তানী গণমাধ্যম দ্য ডন এবং এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
খবরে বলা হয, সোমবার ভারতের রাজ্যসভার অধিবেশনে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল সংক্রান্ত প্রস্তাব পাসের পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন মাহাথির। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে টেলিফোন করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। কাশ্মীর ইস্যুতে তিনি পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করেন।
এ সময় ইমরান খানও তার অবস্থান তুলে ধরে বলেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ভারতের ঘোষণা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার পরিষ্কার লঙ্ঘন। ভারতের এ ঘোষণার ফলে এ আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘ্নিত হবে উল্লেখ করে টেলিফোনে পাক প্রধানমন্ত্রী মাহাথিরকে বলেন, প্রতিবেশি দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটবে। এদিকে মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইমরান খানের সাথে ফোনালাপে বলেছেন, তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করবেন তবে তার আগে এ বিষয়ে ইমরান খানের সাথে সার্বিক আলাপ করে নিতে চান তিনি।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের যে সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। সোমবার ভারতীয় পার্লামেন্টের রাজ্যসভায় ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব ও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পর পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তা প্রত্যাখ্যান করে। ৩৭০ ধারা বাতিলের তীব্র নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কাশ্মীর একটি বিরোধপূর্ণ এলাকা। যা আন্তর্জাতিকভাবে একটি স্বীকৃত বিষয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীর বিষয়ে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত ওই রাজ্যটির বিশেষ মর্যাদা বাতিল করতে পারে না। কাশ্মীরি জনগণ ভারতের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের লড়াইয়ে কাশ্মীরি জনগণকে রাজনৈতিক,কূটনৈতিকসহ সর্বপ্রকারের সহায়তা দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। অধিকৃত কাশ্মীরে নয়াদিল্লির ‘অনৈতিক পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে তা ঠেকাতে সম্ভাব্য সব ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয় ইসলামাবাদ।
‘ভারত সরকারের একতরফা কোনো পদক্ষেপই বিতর্কিত অঞ্চলের স্ট্যাটাসকে পরিবর্তন করতে পারে না। কারণ এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভারত অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের জনগণ মেনে নেবে না।’ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক এ বিবাদের একটি পক্ষ হিসেবে ভারতের নেয়া অবৈধ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পাকিস্তান।’