
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত করেছেন হজ্ব পরামর্শক হিসেবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ্বে যাওয়া ৫৯ জনের ওলামা মাশায়েখ প্রতিনিধি দল। শনিবার সন্ধায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সাথে সাক্ষাত করে নৈশভোজে অংশ নেন বিশিষ্ট আলেমগণ। এসময় রাষ্ট্রপতি ওলামায়ে কেরামদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
ওলামা-মাশায়েখদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে আপনারা বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন। বাংলাদেশি হাজি বা কোনো নাগরিকের আচার-আচরণ, কথা-বার্তায় কেউ যাতে কষ্ট না পায়, আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি না হয়, সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।
হজ্ব মিশনে প্রথমবারের মতো আপনাদের অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি প্রমাণ করে যে বর্তমান সরকার ইসলাম ও আলেম-ওলামাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদায় বিশ্বাসী। আপনাদের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় সম্মানিত হাজিরা সঠিকভাবে হজ্বব্রত পালন করতে সক্ষম হবেন। তাছাড়া হজ্ব পালনকালে আপনাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা আগামী হজ্ব ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি।
সূত্রমতে, মাগরিবের পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে ওলামা মাশায়েখদের বিশিষ্ট এ দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। পরে রাষ্ট্রপতি আলেমদের সঙ্গে এশার নামাজ জামাতে আদায় করেন।
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ওলামা মাশায়েখদের বিশেষ এ দলে দেশের বিভিন্ন বড় মাদরাসার প্রিন্সিপাল, মসজিদের খতিব, কওমি মাদরাসা ভিত্তিক শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া ও আল হাইয়াতুল উলইয়ার লিল জামিয়াতিল কওমি বাংলাদেশ-এর একাধিক সদস্য ও তাদের ছেলেরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় আল হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী, পটিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারী, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রুহুল আমীন, ঢাকার গেন্ডারিয়ার মাদদরাসা বায়তুল উলুমের প্রিন্সিপাল মাওলানা জাফর আহমাদ, শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
নৈশভোজ শেষে ওলামা মাশায়েখদের বিশেষ এ দল দেশবাসী ও সারা বিশ্বের মুসলিমদের শান্তি কামনায় দোয়া করেন।
এসময় ঢালকানগর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জাফর আহমেদ, জিরি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা শাহ্ তৈয়ব, শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার এর মুহতামিম মাওলানা মিজানুর রহমান সাঈদ, চরমোনাই আলিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল-মাদানী, শর্ষিনা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শওকত আলী, মিরপুর ঢাকা আকবর কমপ্লেক্স এর প্রিন্সিপাল মুফতী দেলোয়ার হোসাইন, রামপুরা বনশ্রী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, আফতাব নগর মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি মোহাম্মদ আলী, জামিয়া কোরআনিয়া লালবাগ মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মুফতি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গনি, জামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সালাউদ্দিন নানুপুরী প্রমুখ ওলামায়ে কেরামগণউপস্থিত ছিলেন।
নৈশভোজে ৫৯ সদস্যবিশিষ্ট ওলামা মাশায়েখ দলের সকল সদস্যরা ছাড়াও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন মাদানী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, হজযাত্রীদের ধর্মীয় ও বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতে ৫৯ ওলামা মাশায়েখকে সৌদি পাঠাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় খরচে আলাদাভাবে ওলামা মাশায়েখদের এ বছরই প্রথম হজ্বে পাঠানো হচ্ছে। আগামী ৪ ও ৫ আগস্ট ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে ওলামা মাশায়েখদের এ বিশেষ দল সৌদি আরব যাবেন এবং ২৩ আগস্ট দেশে ফিরে আসবেন।
উল্লেখ্য, ৯ জুলাই ৫৫ জন আলেমের একটি দল গঠন করে ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে এই দলের সঙ্গে আরো ৪জনকে যোগ করা হয়। তালিকায় যোগ হওয়া নতুন চারজন হলেন- হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলীর ছেলে হাফেজ মাওলানা মুফতি শামীম আহমদ (মুহাদ্দিস, মাদ্রাসাতুল আবরার, মাতুয়াইল, ঢাকা), বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দসের ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হাসান যোবায়ের (শিক্ষক, ফরিদাবাদ মাদ্রাসা, ঢাকা), মাওলানা সাজিদুর রহমান (মুহতামিম, দারুল আরকাম মাদ্রাসা, বি.বাড়িয়া) ও মাওলানা মোহাম্মদ মোস্তফা সূফী (মুহতামিম, বসুরহাট আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা,কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী)।
সংশ্লিষ্ট খবর:
রাষ্ট্রপতির সাথে বিদায়ী সাক্ষাতে বঙ্গভবনে হজ্বগামী ৫৯ বিশিষ্ট আলেম
/এসএস