
নাজমুল হাসান, চবি: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রেলমন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম সুজন এমপি আজ ২৪ জুলাই (বুধবার) বিকেল ৪ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে আসেন। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার-এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) রেলমন্ত্রীকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাগত ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক চলমান কার্যক্রম এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অর্জন এবং শিক্ষার্থীদের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ও সহাবস্থানসহ চলমান শিক্ষা-গবেষণার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করেন।
উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর চবি ক্যাম্পাসে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন হচ্ছে শাটল ট্রেন। সিংহভাগ শিক্ষার্থী এ শাটল ট্রেনে করে চট্টগ্রাম শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করে থাকেন। ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের একমাত্র মাধ্যম শাটল ট্রেনে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন সময়ে চবি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শাটল ট্রেন মেরামতসহ লাইন সংস্কার করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।
উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ছাত্র-ছাত্রীদের বৃহত্তর স্বার্থে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন শাটল ট্রেন, বর্তমান শাটল ট্রেনের বগি বৃদ্ধি, প্লাটফরম প্রশস্তকরণ এবং লাইন সংস্কারের বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং মাননীয় উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) উক্ত বিষয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করেন।
রেলমন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম সুজন এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ রেলওয়েতে দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকায়ন এবং দেশের যে সমস্ত জেলায় রেল সংযোগ নেই সেসব জেলায় রেল লাইন স্থাপন করার কাজ দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়েকে অধিকতর আধুনিকায়ন এবং তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর করতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী জুনের মধ্যে ২০০ টি আধুনিক কোচ বাংলাদেশ রেলওয়েতে সংযোজিত হবে। মন্ত্রী চবি উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) উপস্থাপিত বক্তব্য গভীর আগ্রহ ও ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সম্পর্কে জেনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী শাটল ট্রেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসার সময় লাইনের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা অবলোকন করে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি নতুন শাটল ট্রেন বরাদ্দ, চবি স্টেশনে রেললাইনের উভয়পাশে নতুন প্লাটফরম নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম শহর থেকে চবি ক্যাম্পাস পর্যন্ত রেললাইন সংস্কার ও আধুনিকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপস্থিত রেলের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন। পরে মন্ত্রী অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় সবুজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন।
পূর্বাহ্নে মন্ত্রী দুপুর ২.৫০ টায় চট্টগ্রাম শহর থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে শাটলে চড়ে ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাস স্টেশনে পৌঁছার পর মন্ত্রীকে উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে বরণ করে নেন। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন শ্লোগানে চবি রেল স্টেশন চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে। মন্ত্রী চবি স্টেশন থেকে বিকেল ৫.৩০ টায় শিক্ষার্থীদের সাথে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।