
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করছে। তার বক্তব্য ক্ষুদ্ধ স্থানীয় হিন্দুসহ এলবাবাসীরা।
প্রিয়া সাহার বাবার বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার চরবানিয়ারী গ্রামে। শ্বশুর বাড়ি বৃহত্তর যশোরে। প্রিয়ার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুদকের সদর দফতরে উপপরিচালক পদে কর্মরত রয়েছেন। তার দুই মেয়ে প্রজ্ঞা পারমিতা সাহা ও ঐশ্বর্য লক্ষ্মী সাহা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ‘এই প্রিয়া সাহা সুযোগ বুঝে মিথ্যা সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। মুসলিম জঙ্গি গোষ্ঠী তার ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দিয়েছে বলে মিডিয়াতে প্রচার করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্যন্ত এই মিথ্যা তথ্য দিয়ে এসেছে যে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মুসলমান সম্প্রদায় হলো জঙ্গি। এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাংলাদেশের সম্প্রীতি নষ্ট করার উস্কানী। প্রিয়া সাহা অসৎ উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র নিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে’।
স্থানীরা হিন্দুরা বলেন, ‘প্রিয়া সাহার নিজের জমিজমা নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রিয়া সাহা নিজেই নিজের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তারা বলছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঘর থেকে বেশীরভাগ জিনিস পত্র সরিয়ে পুরাতন ভাঙ্গা একটি ঘর প্রিয়া সাহা নিজেই আগুন ধরিয়েছে’।
স্থানীয় এক হিন্দু বলেন, ‘এখানে আমরা হিন্দু মুসলমান সবাই এক সাথে বসবাস করছি। আমাদের ভিতরে কারো সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নাই। আমরা সবাই মিলেমিশে এক সাথ আছি কারো সাথে কোনো দ্বন্দ্ব নাই। আমি হিন্দর ছেলে আমার বাড়ীতে দূর্গা মন্দির আছে কেউ আমার কোনো কাজে বাধা দেনা’। প্রিয়া সাহা যে বক্তব্য দিয়েছে আমরা প্রত্যাখান করছি। সে নিজে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে অন্যকে ফাঁসানোর চেষ্টা কররেছে’।
স্থানীয় হিন্দুরা আরও বলেন, ‘প্রিয়া সাহা তার নিজের সুবিধার জন্য দেশের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছে তার উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিৎ। তারা বলছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সব জিনিস পত্র সরিয়ে পুরাতন ভাঙ্গা একটি ঘরে আগুন ধরিয়ে সেগুলো ভিডিও করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে’।
প্রিয়া সাহার গ্রামের বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনরা বলেন, ‘প্রিয়া সাহার জমিজমা নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্রিয়া সাহা নিজেই নিজের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তারা বলছেন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঘর থেকে বেশীরভাগ জিনিস পত্র সরিয়ে পুরাতন ভাঙ্গা একটি ঘর প্রিয়া সাহা নিজেই আগুন ধরিয়ে দিয়ে সেগুলো ভিডিও করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়েছেন’।
এ বিষয়ে নাজিরপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার রায় বলেন, ‘প্রিয়ার ভাই জগদীশ বিশ্বাসের একটি পরিত্যক্ত ঘরে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকজনকে ফাঁসানোর জন্য আসামি করা হয়। সেই মামলা চলমান। আমি মনে করি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে এ নিয়ে অভিযোগের আসল উদ্দেশ্য হলো তার মেয়েদের গ্রিন কার্ড পাইয়ে দেওয়া। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই’।
পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন বলেন, ‘নাজিরপুর উপজেলায় বা পিরোজপুর জেলার কোথাও কোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ভবিষ্যতে কেউ চেষ্টা করলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে। দেশের বাইরে গিয়ে যেকোনো নাগরিকের উচিত দেশের বিষয়ে ভেবেচিন্তে কথা বলা’।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ২৭টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তখন তিনি এমন অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
গত ১৭ জুলাই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে বেঁচে ফেরা লোকেদের সাথে কথা বলেন। নিউ ইয়র্কের সল্ট লেক সিটির অনলাইন টেলিভিশন ‘এবিসি৪’ এর অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে এটি সরাসরি সম্প্রচার করে। বার্মা, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, ইরাক, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান এবং জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের ২৭ জনের সাথে কথা বলেন ট্রাম্প।
জিআরএস/পাবলিক ভয়েস