
বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকসভায় পাশ হয়ে গেল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সংশোধনী বিল। আর সেখানেই তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।‘এ ভাবে ভয় দেখাতে পারবেন না’’ বলে সরাসরি অমিত শাহের উদ্দেশে মন্তব্য ছুড়ে দেন ওয়াইসি। জবাবে শাহ বলেন, ‘আপনার মনে ভয় ঢুকে গেলে আমরা কী করতে পারি!’ খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
খবরে বলা হয়, এবার থেকে শুধুমাত্র দেশে নয়, বিদেশ বিভুঁইয়ে ভারতীয়দের উপর হামলা হলে, সেখানে গিয়েও তদন্ত করতে পারবেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। তবে লোকসভায় বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে বিলটি পাশ হয়ে গেলেও, রাজ্যসভাতেও সেটিকে পাশ করাতে হবে বিজেপিকে। তাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষর করলে তবেই নয়া আইন চালু হবে।
এ দিন সেই নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই বিলটির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলেন বিরোধীরা। বিলটিতে সংশোধন ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার আদতে এনআইএ-র অপব্যবহার করতে চাইছে বলে অভিযোগ তোলেন তারা। তাদের নিরস্ত করতে শাহ জানান, ধর্মের নিরিখে এই বিলের অপব্যবহার কোনও ভাবেই হতে দেবে না সরকার। বরং ধর্ম যাই হোক না কেন, সব ধরনের সন্ত্রাসকে নির্মূল করাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু তা নিয়ে হই হট্টগোলের মধ্যেই মারাত্মক অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতা সত্যপাল সিংহ। নাম না করে বলেন, একসময় এনআইএ-কে তদন্তে বাধা দিয়েছিলেন হায়দরাবাদের এক নেতা।
সত্যপালের এই অভিযোগেই ক্ষুব্ধ হন ওয়েইসি। বাদানুবাদ শুরু হলে ওয়াইসিকে শান্ত হতে বলেন অমিত শাহ। চুপ করে শুনতে বলেন। কিন্তু বিজেপি সভাপতি তার দিকে আঙুল তোলায় ফের ক্ষুব্ধ হন ওয়েইসি। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে ভয় দেখাতে পারবেন না আমাদের।’ জবাবে আমিত নিম্ন মনমানসিকতার পরিচয় দেন।
এনআইএ সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘বিদেশে তদন্ত করতে পাঠিয়ে এনআইএ-কে কী ক্ষমতা দিচ্ছেন আপনারা? অন্য সার্বভৌম দেশগুলি আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের অনুমতি দেবে কী ভাবে? আফগানিস্তানে ভারতীয় দূতাবাসে যদি হামলা হয়, সে ক্ষেত্রে সেই দেশের আইন মেনেই তদন্ত হবে। সেখানে এনআইএ-কে কী বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে?’ ওয়াইসি আরও বলেন, ‘অজমেঢ়, সমঝোতা বিস্ফোরণ নিয়ে তো আজও কোনও পদক্ষেপ করেনি সরকার। বেশ কিছু মামলায় কোর্টে প্রমাণ পর্যন্ত পেশ করতে পারেনি এনআইএ। হামলাকারী যদি অ-মুসলিম হয় আর পীড়িত যদি হয় মুসলিম, সে ক্ষেত্রে সরকার হাত গুটিয়েই বসে থাকবে।’
কংগ্রেসের তরফেও এই সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করা হয়। তাদের দাবি, এনআইএ-র হাতে ব্যাপক ক্ষমতা তুলে দিয়ে দেশে পুলিশতন্ত্র কায়েম করার প্রচেষ্টা চলছে।
আইএ/পাবলিক ভয়েস