
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার একক ফসলি জমি। আজ রোববার বিকালে জামারগাঁও রাধাপুর জামে মসজিদের কাছে ‘কুশিয়ারা ডাইকে’ এই ভাঙন দেখা দেয়।
জানা যায়, গত তিনদিন ধরে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে সব চেয়ে ভয়ঙ্কর আকার ধারন করে কুশিয়রা নদী। বর্তমানে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনদিন ধরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা কুশিয়ারার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই বাঁধের রাধাপুর অংশে ভাঙন দেখা দেয়।
এতে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার ফললি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। রাতের মধ্যে কয়েক হাজার বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো- আউশকান্দি ইউনিয়নের বনগাঁও, পারকুল, ঢালার পাড়, ব্রাক্ষণ গ্রাম, পাহাড়পুর, ইসলামপুর এবং দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক, কসবা, কুমারকাঁদা, ফাদুল্লাপুর, রাধাপুর, দূর্গাপুর, জামারগাঁও, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ইনাতগঞ্জ বাজার, উমরপুর, পূর্ববাজার কলনী, চন্ডিপুর, বটপারা, বাউরকাপন, মোকামপারা, রাজনগরসহ আশ পাশের অন্তত ৫০টি গ্রাম।

এদিকে, পানিবন্ধি মানুষদের জন্য ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের সবগুলো স্কুলে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে যেতে শুরু করেছেন পানিবন্ধি মানুষরা। তাদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০০ টন চাল ও ৯৭১ বান্ডিল টিন মজুদ রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে কন্টোলরুম। সেখা থেকে বন্যার্থরা সার্বক্ষণিক সেবা পবেন।
হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকালে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন।’
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন হাসান বলেন, ‘উপজেলায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক হট লাইন নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারবেন পানিবন্দি লোকজন। এছাড়া বন্যার্থদের সহযোগিতায় চাল ও টিন মজুদ রয়েছে।
জিআরএস/পাবলিক ভয়েস