জীবিকা নির্বাহের জন্য এরচেয়ে নির্মম পন্থা আর হতে পারে কী না জানা নেই। খালে বিষ ঢেলে চিংড়ি মাছসহ বিভিন্ন মাছ শিকার করছে সুন্দরবনের জেলেরা। বর্ষাকালের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত এমন নির্মম অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের আশেপাশের খালের অনেক জেলেরা। সম্প্রতি বেসরকারী টেলিভিশন যমুনা টিভির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চিত্র।
সেখানকার স্থানীয় জেলেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এমন ঘৃণ্যপন্থায় মাছ ধরার কাজ করছে তারা। বাজারে প্রচলিত কীটনাশক ব্যবহার করেই তারা এভাবে মাছ শিকার করছে। খালের এক প্রান্তে তিন চার বোতল বিষ ঢেলে দিয়ে তারপর জাল বসিয়ে তারা অপেক্ষা করতে থাকেন মাছগুলো মরে যাওয়ার। আধমরা অবস্থায় জালে আটকা পড়লেও শেষ পর্যন্ত মাছগুলো সব মরে যায় নিমিষেই।
বিষের এই প্রভাবে কেবল মাছই নয় মারা যাচ্ছে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালের অনেক পোকা মাকড় ও জীববৈচিত্র। সুন্দরবনের ঐতিহ্যের লাল কাকড়াও মারা যায় এই বিষের প্রভাবে। সাথে নষ্ট হয় লতাগুল্ম এমনকি বানর, হরিণসহ বড় বড় প্রানীরাও এই বিষমিশ্রিত পানি খেয়ে ধিরে ধিরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এসব ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলে তারা বলছেন, বিষ দিয়ে মাছ ধরা জেলেদের তালিকা তৈরি করছি আমরা কিন্তু বাস্তব চিত্রে দেখা গেছে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসেই জেলেরা দির্ঘদিন ধরে এমন অপকর্ম করে আসছে।
রক্ষণাবেক্ষনের সমস্যা ও সুন্দরবনের আশেপাশে বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মানসহ বিভিন্ন কল কারখানার অনুমোদন দেওয়ায় বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে সুন্দরবনের বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে এ বছর। ইউনেস্কো স্বীকৃত এই বিশ্ব ঐতিহ্যের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রক্ষায় তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যায় না সংশ্লিষ্টদের।