
এক বছর পরই গভীর পানি সংকটে ভুগবে গোটা ভারত৷ দেশের সর্বোচ্চ পরিকল্পনা সংস্থা ‘নীতি আয়োগ' এ কথা জানিয়েছে৷ দুশ্চিন্তায় গোটা দেশ৷ ডয়বে ভেলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে চেন্নাই, মহারাষ্ট, রাজস্থান, গুজরাট ও কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যে অস্বাভাবিক জলসংকটে নাজেহাল বিপুল সংখ্যক মানুষ৷
এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে চেন্নাইকে শুধুমাত্র বৃষ্টিই রক্ষা করতে পারে৷ সম্পূর্ণ ফাঁকা কুয়ো ও জলবিহীন শহর চেন্নাই৷ রাজ্যের প্রধান ৪টি জলাধারই শুকনো৷ সরকারি জলের ট্যাঙ্ক থেকে এক ফোঁটা জলের আশায় দীর্ঘক্ষণ ঠায় লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মানুষ৷ বন্ধ স্কুল-কলেজ, রেস্তোরাঁও৷ মেট্রো রেলে বন্ধ শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র৷ সর্বত্র বৃষ্টির জন্য আকুতি৷ ভারতের দক্ষিণের রাজ্য চেন্নাইয়ে জল-সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা দেখে হলিউডের অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে কথাগুলো লিখেছেন৷ গোটা ভারতে এমন অবস্থা তৈরি হতে আর বেশি দেরি নেই৷ এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল৷
ভবিষ্যতে দেশের পানিসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবিদরা৷ এ নিয়ে চিন্তিত ভারত সরকার এবং বিরোধী দলগুলিও৷ ক'দিন আগে রেডিও-র মাসিক অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত'-এ এ নিয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তিনি বলেছেন, ‘একাধিক রাজ্যে জলের অভাব দেখা দিয়েছে৷ বর্ষায় যে জল পাওয়া যায়, তার মাত্র ৮ শতাংশ সংরক্ষণ করা যায়৷ এই জল মোটেই জলসংকট মোকাবিলার পক্ষে যথেষ্ট নয়৷'
ওই খবরে বলা হয়, ভারতে মোট ৬ লক্ষ ৫৬ হাজার গ্রাম রয়েছে৷ সেখানে ১৯ কোটি ১৯ লক্ষ পরিবার বসবাস করে৷ জনসংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটি৷ গতবছর জুনে মাসে নীতি আয়োগের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৬০ কোটি মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের কোনো বন্দোবস্ত নেই৷ দেশে মোট ১৮ শতাংশ মানুষ পাইপলাইনে পানীয় জলের পরিষেবা পাচ্ছেন৷ মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরালা ও গুজরাটসহ বিভিন্ন রাজ্যে পানীয় জলের গভীর সংকট দেখা দিয়েছে৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷ ভূগর্ভস্থ জল তুলে চাষাবাদ-সহ অন্যান্য কাজে লাগানোয় জলস্তর ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে৷ প্রতিদিন আরেও সমস্যা বাড়ছে৷ মহারাষ্ট্রের ঔরাঙ্গাবাদে ট্রেনে চেপে ১৪-১৫ কিলোমিটার দূরে পাননি কিনতে যেতে হয় মানুষকে৷ এখন বৃষ্টির পানি ধরে রেখে চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা না করা হলে সমস্যা আরেও বাড়বে৷'
আইএ/পাবলিক ভয়েস