অর্থ-বিত্ত, যশ-খ্যাতি কিংবা স্বার্থের লোভ পরিহার করে আল্লাহর ওয়াস্তে সত্য তথা হক প্রকাশের মাধ্যমে দীনি দাওয়াতি কাজ চালানোর জন্য বিশেষ নসিহত প্রদান করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি ও হাটহাজারী মাদরাসার পরিচালক আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।
জাতীয় ওয়ায়েজিন পরিষদের উদ্যোগে প্রায় দেড়শজন ওয়ায়েজীনদের একটি দল আজ চট্টগ্রামে আল্লামা আহমদ শফী ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথে সাক্ষাতে গেলে তিনি এ নসিহত করেন।
জাতীয় ওয়ায়েজীন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ওয়ায়েজীন পরিষদ বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ প্রায় শতাধিক ওয়ায়েজীনে কেরাম চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী এবং মুজাহিদে জামান আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথে বিশেষ সৌজন্যে সাক্ষাতে যান।
এসময় দেশের শীর্ষ মুরুব্বি শাহ আহমদ শফী সাহেব ওয়ায়েজীনদেরকে বাইয়াত ও সবক, খাস দোয়া ও মোনাজাত বাদ দিকনির্দেশনামূলক বিশেষ নসিহত প্রদান করেন।
বিশেষভাবে তিনি বলেন,
- ওয়ায়েজীনরা সর্বদা আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতাকে তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ মনে করে ইখলাসের সাথে দীনের দা'য়ীর ভূমিকা পালন করবেন।
- কোরআন হাদিস এবং হক্কানী বুযুর্গদের জিন্দেগির শিক্ষনীয় আমলী ঘটনাবলী এবং প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে শিক্ষামূলক শের (কবিতা/গজল) উপস্থাপনের মাধ্যমে দাওয়াতী কাজ চালানোর পরামর্শ দেন।
- তিনি সর্বপ্রকার উদ্ভট বানোয়াট কিচ্ছা কাহিনী বর্জন করে সমকালীন প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা সম্বলিত বিষয়ের উপর আলোচনা করার নির্দেশনা দেন।
- দীর্ঘ প্রায় দেড় ঘন্টা নসিহতকালে তিনি বলেন, আমি আমার জীবনটা বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদের ময়দানে বিলিয়ে দিয়েছি। আপনারাও- কাদিয়ানী, আহলে হাদিস ও বিদ'আতীসহ সকল ভন্ডদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সোচ্চার ভূমিকা পালন করবেন।
পৃথক সাক্ষাৎকালে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ওয়ায়েজীনদেরকে বলেন-ইসলাম, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের মতো নওজোয়ান মুজাহিদরা মাঠে ময়দানে জাগ্রত থাকলে বাতিল কখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে সাহস পাবে না। বুকে হিম্মত আর সাহস নিয়ে আপনারা সকল প্রকার বাতিলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাবেন, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে কখনো ভয় করবেন না। তিনি নিজেদের ইসলাহের জন্য মাঝেমধ্যে জাতীয় ওয়ায়েজীন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ইসলাহী মজলিস এর আয়োজন করার গুরুত্বারোপ করেন।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন- জাতীয় ওয়ায়েজীন পরিষদ নামটির মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ও স্বার্থকতা রয়েছে। এ নামটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আপনাদের সাথে সবসময় আছি এবং থাকবো ইনশাল্লাহ। আপনারা যখন আমাকে ডাকবেন আপনাদের সাথে পাবেন।
এসময় আল্লামা শাহ আহমদ শফী এবং আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেবকে একটি আন্তর্জাতিক সীরাত মাহফিলে দাওয়াত দিলে তা কবুল করেন এবং উভয় হযরতের সম্মতিক্রমে আগামী ২৫ জুলাই রোজ বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক সীরাত মাহফিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখযোগ্য ওয়ায়েজীনে কেরামের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা হলেন- আল্লামা মুজিবুর রহমান চাটগামী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম রাশেদী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মুফতি লুৎফুর রহমান মারুফ, মাওলানা নুরুল আমিন আল ফরিদী, মুফতি হামিদুর রহমান সাঈফী, মুফতি মাওলানা সালমান সাকি, মুফতি মাহবুবুর রহমান নবাবগঞ্জী, মাওলানা গাজী সিদ্দিকুর রহমান, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ সাহেব, মুফতী আঃ রহীম হেলালী, মুফতি শামসুল হক ওসমানী, মুফতি হেদায়েতুল্লাহ গাজী, মাওলানা মুয়াবিয়া আল হাবিবি, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মাওলানা আহমাদুল্লাহ উজানবি, মাওলানা মাহমুদুল হাসান বাসারী, মাওলানা আবুল কালাম আইয়ুবী, মাওলানা আহমদ আবু নাঈম, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা এস এম দ্বীন ইসলাম, মাওলানা মুফতি মাসরুর তাসনিম, মুফতি মোহাম্মদ সালমান সাকি, মুফতি আবুল বাশার রেদোয়ান, মাওলানা আলাউদ্দিন যশোরী, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মুফতি জাহিদুল ইসলাম, মাওলানা মোহাম্মদ আনাস, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল খালেক, মাওলানা মাহবুবুর রহমান সাইফী প্রমুখ ওয়ায়েজীন পরিষদ নেতৃবৃন্দ।