
সম্প্রতি ভারতের কৃষকদের আত্মহত্যার একটি চাঞ্চল্যকর তথ্যে উঠে এসেছে যে, গত চার বছরে গড়ে দৈনিক আট জন করে কৃষক আত্মহত্যা করেছেন দেশটিতে। তীব্র খরা ও পানি সঙ্কটের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন ভারতের কৃষকরা। আর এমন অবস্থায় ঋন পরিশোধ ও পরিস্থিতির শাসাল দিতে ব্যর্থ হন তারা। এ কারণে আত্মহত্যা করেন কৃষকরা।
গত চার বছরে মোট ১২ হাজার ২১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন দেশটির মহারাষ্ট্র রাজ্যে। যা তার আগের চার বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ! তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সুভাষ দেশমুখ।
এ বছরের শেষে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি সেখানে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করতে চাইছে। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে সামনে আসছে বেড়ে চলা কৃষক আত্মহত্যার এই ইস্যু। গত চার বছরে বেশ কয়েকবার কৃষকরা মুম্বাই পর্যন্ত মিছিল করেছে।
কিন্তু সরকারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও মহারাষ্ট্রের কৃষক মৃত্যু হ্রাসের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। সুভাষ দেশমুখের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে ৬১০ জন কৃষককে আত্মহননের পথই বেছে নিতে হয়েছে।
বিধানসভায় ওঠা প্রশ্নের উত্তরে দেওয়া এই হিসেব থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমায় আত্মহত্যা করেছেন ৬ হাজার ২৬৮ জন কৃষক। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ২১ জনে। ঋণের ফাঁদ থেকে শস্যের পর্যাপ্ত ফলন না হওয়া- নানা কারণে এই সব আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা এই মৃত্যু মিছিলের জন্য সরকারি প্রকল্পগুলির ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৮ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে জলযুক্ত শিভারের (জল সংরক্ষণ প্রকল্প) জন্য। ১৮ হাজার ৬৪৯টি গ্রামে কাজ সম্পূর্ণও হয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের জলকষ্ট বিপুল আকার ধারণ করেছে। জলস্তর নেমে গিয়েছে ৬.১১ শতাংশ, যাকে যথেষ্ট আশঙ্কাজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের ঋণ মকুব প্রকল্পও কৃষক আত্মহত্যায় রাশ টানতে পারেনি। ১২ হাজার ২১ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৫০০টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালের জুন মাসে ওই প্রকল্প চালু হয়ে যাওয়ার পরেও। সরকারের আরও একটি প্রতিশ্রুতি ‘ট্যাঙ্কার-মুক্ত মহারাষ্ট্র’ ২০১৯ এর মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
আইএ/পাবলিক ভয়েস