
সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে মিশরীয়দের গণতন্ত্রের পথে যাত্রা ও মুক্তির স্বপ্ন। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম ও একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তার মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে মিসর। এ ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। কাতার গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, মুরসির মৃত্যুর জন্য ইতিহাস মিসরের একনায়ককে ক্ষমা করবে না।
ব্রিটেনের এক্সিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্রাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইন্সটিটিউট’র গবেষক ও ২০১৫ সালে আল-জাজিরার ‘ইয়ং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’ জয়ী তালহা আবদুর রাজাক তার প্রবন্ধে বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে হয়েছিল তিউনিসিয়ার ৩০ বছরের স্বৈরশাসক বেন আলিকে।
তিউনিসীয়দের দেখেই গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিল দশকের পর দশক ধরে স্বৈরশাসনের কবলে থাকা মিশরীয়রাও। মাত্র কয়েকদিনের আন্দোলন আর প্রতিরোধেই বেন আলির মতোই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন মোবারক।
অবসান হয় ৬৬ বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের। এর পরে উৎসবের আমেজে অনুষ্ঠিত হয় মিশরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন। নতুন স্বপ্ন ও আশা নিয়ে দেশের হাল ধরেন জননন্দিত নেতা মোহাম্মদ মুরসি।
কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে যায় সে স্বপ্ন। গণতন্ত্রের ওপর ফের স্বৈরশাসনের থাবা।
ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হন মোহাম্মদ মুরসি। অবশেষে গত সোমবার চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। এ অকাল মৃত্যুর মধ্যদিয়ে শেষ হয়ে গেল স্বৈরশাসনের দেশ মিশরের গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন। অস্ত গেল গণতন্ত্রের শেষ সূর্য।
মিশরের বর্তমান বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে যাদের জানা আছে, তার এ মৃত্যুতে তারা কেউ অবাক হননি।
এ অকাল মৃত্যুর মধ্যদিয়ে সিসির স্বৈরাচারী সরকার একটা বার্তাই দিতে চেয়েছে, মিশরীয়রা যেন আর কখনোই গণতন্ত্র ও মুক্তির স্বপ্ন দেখার দুঃসাহস না করে।
যদি করে তাহলে কায়রোর তাহরির, রামসেস আর রাবিয়া স্কয়ারে হাজার হাজার মিশরীয়কে হত্যা করে যে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়া হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে।
বিবিসি, আনাদোলু
আইএ/পাবলিক ভয়েস