মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা হাফেজ মুহাম্মাদ মুরসিকে মুসলিম বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা আখ্যা দিয়ে তার মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রকাশ করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন।
শোক বার্তায় বলা হয়, বিশ্বের অবিসংবাদিত এই মুসলিম নেতা মুহাম্মদ মুরসির ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ ও সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ।
আজ ১৮ জুন (মঙ্গলবার) মধ্যরাত ১২ টায় এক যৌথ শোকবার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, মিসরের প্রথম অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান মুহাম্মাদ মুরসি। তাকে অনৈতিকভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
তারা বলেন, অর্থের বিনিময়ে কাতারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের যে অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল, তা ছিল একটি অজুহাত মাত্র।
মূলত এই অবিসংবাদিত মুসলিম নেতা পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন। নেতৃদ্বয় মুহাম্মাদ মুরসির শোকাহত পরিবার ও মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাকর্মীর প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
প্রসঙ্গত : মিসরে ইসলাম, মানবতা ও গনতন্ত্র বিদ্বেষী অশুভ চক্রের ষড়যন্ত্রে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি গতকাল (১৭ জুন) বিচার চলাকালীন অবস্থায় আদালতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
গতকাল সোমবার মিসরের একটি আদালতের এজলাসেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। শহীদ এই প্রেসিডেন্ট বিচারকের কাছে কথা বলার অনুমতি চাইলে তাকে কথা বলতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এ সময় তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। এক পর্যায়ে তিনি হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
২০১১ সালে আরব বসন্তের জেরে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে বিশাল গণঅভ্যুত্থান। এতে পদচ্যুত হন হোসনি মোবারক।
এরপর মিসরের প্রথম অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান হাফেজ ড. মুহাম্মাদ মুরসি।
কিন্তু ২০১৩ সালে কথিত গণঅসন্তোষের সুযোগ নিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিসরীয় সেনাবাহিনী। পরে প্রেসিডেন্টের মসনদে বসেন মুরসির হাতে সেনাপ্রধান হওয়া আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি।
মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৩ সালে। এর হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিভিন্ন অভিযোগে অনেককে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
মুরসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অর্থের বিনিময়ে কাতারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি পাচার করেছেন। ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এরপর ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিম্ন আদালত। আদালত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন। তবে মুহাম্মাদ মুরসি এ অভিযোগ অস্বিকার করেছেন।