দুর্যোগ মোকাবেলার সময় অগ্রভাগে থাকে ইন্দোনেশিয়ার ইসলামপন্থী একটি গ্রুপ ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷
ভূমিকম্পের পর ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্টের তাৎক্ষিণক সাহায্য-সহযোগিতা অনেকের মন জয় করে।
পালু এলাকায় ফ্রন্টের সুবিধাভোগীদের একজন ৫০ বছর বয়সি আনওয়ার রাগাউয়া৷ গত সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পের পর ফ্রন্টের সহযোগিতা পেয়ে বেশ অভিভূত তিনি৷
এখন নিজের বাড়িতে পতাকা টানিয়ে রাখেন তিনি৷ অনৈতিক কাজে জড়িয়ে যেতে পারেন পুলিশ এমন অভিযোগ এনে পতাকাটি নামাতে বললেও শোনেনি তিনি৷
কারণ হিসাবে রাগাউয়া বলছেন, গ্রামে ভূমিকম্পের পর তিনিই কেবল বেঁচেছিলেন৷ তখন ফ্রন্টের কর্মীরাই হয়েছে তার একমাত্র অবলম্বন৷ তারা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে এবং ত্রাণ দিয়েছে৷
শাসক সুহার্তোর পতনের সূচনা হয় ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷ ফ্রন্টের মিলিশিয়ারা শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে থাকে৷ বার কিংবা পতিতালয়ে বন্ধের জন্য তারা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
ইন্দোনেশিয়ার ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ২৩টিতে সংগঠনটির শাখা রয়েছে৷ তাদের সামরিক কায়দার সাংগঠনিক কাঠামো তৃণমূলেও বিস্তৃত৷
এই সংগঠনের মানবিক সহায়তা প্রদানকারী অংশের নাম রেড ক্রিসেন্ট ইন্দোনেশিয়া৷
গত বছরের সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রায় এলাকায় সুনামির ধ্বংসযজ্ঞে ৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এই দুর্যোগের পর ব্যাপক মাত্রায় ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছিল ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷
সরকারি সংস্থার আগেই হতাহতদের উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, অস্থায়ী থাকার জায়গা এবং মসজিদ নির্মাণ ছিল তাদের ওই কার্যক্রমে৷ বছরজুড়ে তাদের ফ্রি স্বাস্থ্যসেবাও দরিদ্র জনগণের আস্থার জায়গা৷
ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট দাবি করেছে, পালুতে সুনামির পর তারা ৩৫০ টন ত্রাণ বিতরণ করেছে৷ তাদের ত্রাণ কার্যক্রম ছিল দ্রুত তৃণমূলে গিয়েছিল৷ অনেক জায়গায় সরকারিকর্মীদের আগেই উদ্ধার কাজ চালিয়েছিল তারা৷
এ কারণে সরকারি সংস্থার উপর রুষ্ট হলেও ফ্রন্টের কাজ নিয়ে খুশী হয়েছে সাধারণ মানুষ৷ সুনামির পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে সংগঠনটি৷
পালুতে দুর্যোগের তিন মাস পর রাগাউয়ার জন্য একটি মাছ ধরার নৌকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট৷ এখন সেটার আয় থেকে ব্যয় নির্বাহ করছেন তিনি৷
ইন্দোনেশিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের কারণে সরাসরি রাজনীতিতে নেই এই ফ্রন্ট৷ তবে নানা সময় নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানের জানান দিয়েছে তারা৷ গত জাতীয় নির্বাচনে এই সংগঠনের সমর্থিতরা আগের চেয়ে ভালো করেছিল৷
রাজধানী জাকার্তায় খ্রীস্টান গভর্নর নির্বাচিত হলে ২০১৬-১৭ সময়ে তারা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়৷ এরপরের নির্বাচনে ওই গভর্নর হেরে যান এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তাকে জেলে যেতে হয়৷
সূত্র: ডয়চে ভেলে
আইএ/পাবলিক ভয়েস