
বাঘের বাজারে পৌঁছালে সালাহ উদ্দিন নেমে বাসের গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় সালাহ উদ্দিনকে চাপা দিয়ে চালক দ্রুতগতিতে বাসটি নিয়ে ঢাকার দিকে চলে যায়।
ভাড়া নিয়ে বিতর্ক হয় বাসে। এ নিয়ে যাত্রীকে মারপিটও করে বাসের হেলপার। গন্তব্যে পৌঁছে বাসটির পথরোধ করার চেষ্টা করে যাত্রী। এসময় দ্রুত গতিতে যাত্রীকে রাস্তায় পিষে যায় বাসের চালক। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ওই যাত্রী। পালিয়ে যায় বাসের চালক ও হেলপার। এমন লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরে।
গতকাল (৮জুন) রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘেরবাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বাসটি আটক করা গেলেও চালক ও সহযোগীকে আটক করা যায়নি। চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরের নাম-ঠিকানাও পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, নিহত যাত্রীর নাম সালাহ উদ্দিন আহমেদ (৩৫)। গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকার আতাউর রহমান মেম্বারের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। স্থানীয় স্কটেক্স অ্যাপারিয়াল কারখানার গাড়ি চালক ছিলেন। ঢাকার আলুবাজারের মৃত শাহাব উদ্দিনের তার পিতা।
নিহতের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, শুক্রবার ঈদের ছুটিতে স্বামীকে নিয়ে ময়মনসিংহে বাবার বাড়ি যান। রোববার সকালে স্বামীকে নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজারের ভাড়া বাড়িতে ফিরতে ময়মনসিংহ থেকে ‘আলম এশিয়া’ বাসে উঠেন।
পথে বাসের ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে হেলপারের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বাসের ভেতরেই স্বামী সালাহ উদ্দিনকে মারধর করেন বাসের হেলপার। এসময় মুঠোফোনে বাঘের বাজার এলাকার স্বজনদের ঘটনা জানান সালাহ উদ্দিন।
পরে বাসটি বাঘের বাজারে পৌঁছালে সালাহ উদ্দিন নেমে বাসের গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় সালাহ উদ্দিনকে চাপা দিয়ে চালক দ্রুতগতিতে বাসটি নিয়ে ঢাকার দিকে চলে যায়।
পারুল আক্তার বলেন, সালাহ উদ্দিন যখন গাড়ি থেকে নেমে যান তখন আমি নামতে চাইলে হেলপার বাধা দেন। পরে আমাকে নিয়ে বাসটি চলতে শুরু করে। এ সময় কান্নাকাটি শুরু করলে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া ফু-ওয়াং কারখানার সামনে নিয়ে বাসের গতি কমিয়ে আমাকে ফেলে দেন হেলপার।
মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় বাসটি আটক করা হয়। নিহতের মরদেহ ময়ানতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তবে বাসের চালক ও তার সহকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা যায়নি। নিহতের ভাই জালাল উদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিত্রে আলম এশিয়া পরিবহনের চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
/এসএস