
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ১০ বছর বয়সে সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে মুর্তাজা কুরিওসিস নামের এক কিশোরকে মৃত্যুদণ্ড দিতে চলছে সৌদি আরব। সরকার বিরোধী শ্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ৩ বছর পর ১৩ বছর বয়সে তাকে আটক করা হয়। তার বর্তমান বয়স ১৮ বছর।
মুর্তাজার বিরুদ্ধে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে সৌদি আরব। এঘটনায় আপত্তি জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা।
মুর্তাজাকে মৃত্যুদণ্ডে দিতে ইতোমধ্যে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। মুর্তাজার বিরুদ্ধে যে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে, সে অনুসারে ‘অপরাধ সংঘঠিত করার সময়’ তার বয়স ছিলো ১০ বছর।
মুর্তাজার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মুর্তাজার ভাই আলী কুরিওসিস মোটরসাইকেলেযোগে পূর্বাঞ্চলীয় শহর আওয়ামিয়াতে গিয়ে থানায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেন, সেসময় তার সঙ্গে ছিল মুর্তাজাও। মুর্তাজার ভাইকে পরে নির্মমভাবে হত্যা করে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ইসলামি গণজাগরণের উত্তাল সময়ে সৌদি রাজতন্ত্রের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র দাবিতে সেসময় দেশজুড়ে যে গণবিক্ষোভের সূচনা হয়েছিলো তার অংশ হিসেবেই মুর্তাজা কুরিওসিস তার বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে সাইকেল রাইডে নেমেছিলো। মুর্তাজা তার সেই ৩০ জন বন্ধু বান্ধবের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেসময় সৌদি সরকার এই অল্পবয়সী বালকদের জড়ো হওয়ার বিষয়টি ‘পর্যবেক্ষণ’ করে। ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তিন বছর পর মুর্তাজাকে গ্রেফতার করে সৌদি পুলিশ। তখন মুর্তাজার বয়স ছিলো ১৩।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, পরিবারের সঙ্গে বাহরাইনে চলে যাওয়ার সময় সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় চার বছর ‘বিচার-পূর্ব কারাভোগ’ করানোর পর এখন তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করতে চায় সৌদি আরব সরকার।
মুর্তাজার এখন সন্ত্রাস আদালতে বিচার চলছে। মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে ১৮ বছর বয়সে পদার্পণের কয়েক মাস আগে।
এছাড়া বিক্ষোভের সময় সহিংসতা, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পেট্রোল বোমা হামলায় সহযোগিতা, ভাইয়ের জানাজার সময় পদযাত্রা বের করার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রাষ্ট্রপক্ষ এসব অভিযোগের ব্যাপারে মুর্তাজার ‘স্বীকারোক্তি’র কথা বললেও মানবাধিকারকর্মীরা ও তার স্বজনরা অভিযোগ করছেন, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
/এসএস