ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এক চিঠিতে ইরানকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বিশেষ করে তেল এবং ব্যাংকিং খাতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য পরমাণু সমঝোতায় সই করা দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় সীমা বেঁধে দিয়েছে। এই দেশগুলো হচ্ছে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন।
এতে বলা হয়েছে, ইরানের দাবি যতোটা মেনে নেওয়া হবে সে অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে ইরান। না হলে, পর্যায় ক্রমে আরও প্রতিশ্রুতি পালন করা থেকে বিরত থাকবে ইরান। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ইরান, পরমাণু সমঝোতা বা জেসিপিওএ'র কিছু কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার কাজ স্থগিত রাখবে। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এবং ভারি পানি মজুদ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি ইরান আর মানবে না।
এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও বলেছেন, "পরমাণু সমঝোতায় ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ৩.৬৭ শতাংশ রাখার কথা বলা হলেও এ থেকে তারা সরে আসবে। অর্থাৎ এখন থেকে তারা এ ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা আর মানবে না।" তিনি বলেন, "আগামী দুই মাস পর আরাকে উৎপাদিত ভারি পানির ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।"
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা ধ্বংস করার জন্য এ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এক বছর পেরিয়ে গেছে। ইরান এক বছর ধৈর্য ধরেছে কিন্তু এ ধৈর্যেও একটা সীমা আছে। গত এক বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু যে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে তাই নয় একই সঙ্গে আজ নয় কাল নয় করে সময় ক্ষেপণ করে তারা পরমাণু সমঝোতায় ইরানের স্বার্থকে পদদলিত করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং পরমাণু সমঝোতায় স্থায়ীভাবে ইরানকে ধরে রাখার মতো কিছু অযৌক্তিক শর্ত আরোপ করা থেকে বোঝা যায় আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ এমন কিছু বিষয় চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে যার সঙ্গে পরমাণু সমঝোতার কোনোই সম্পর্ক নেই।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এনপিটি'র বাড়তি প্রটোকল বা সম্পূরক চুক্তি মেনে নিয়ে ইরান আস্থার প্রমাণ দিয়েছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে শুধু যে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে তাই নয় একই সঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবও লঙ্ঘন করেছে। ইরানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হোসেন কাশানি বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদে যে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তাকে উপেক্ষা করা যাবে না।
আইএ/পাবলিক ভয়েস