ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
গণমাধ্যমে প্রেরিত ওই শুভেচ্ছা বাণীতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে মাহে রমজান সমাগত। রমজান মাস আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস। সহানুভূতির মাস। এ মাসের যথাযথ মর্যাদা রক্ষার জন্য সবস্তরের মুসলমানকে এগিয়ে আসতে হবে। রমজানের পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নাগালের মধ্যে রাখতে হবে।
গরীব, অসহায় ও মেহনতি মানুষ যেন অর্ধাহারে ও অনাহারে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শ্রমিকের শ্রম কমিয়ে দিয়ে পুরাপুরি মজুরি প্রদান করা সকলের কর্তব্য।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে সকলকে মারামারি, হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা ও চোগলখোরী ছেড়ে দিয়ে আত্মসংযম অর্জন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এ মাসে আল্লাহ্ তা’য়ালা পবিত্রগ্রন্থ আল-কোরআন নাজিল করে মানুষকে পথ প্রদর্শণ করেছেন। রমজান মাসে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে এবং সকল প্রকার ফেৎনা-ফাসাদ ছেড়ে দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সত্যিকার আল্লাহর ভয় অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই রমজানের পবিত্রতা রক্ষা এবং সকল প্রকার গর্হিত কাজ হতে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি মজুতদারী, মুনাফাখোরী, কালোবাজারী ব্যবসায়ীরা যাতে করতে না পারে সেজন্য সরকারকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান।
সৈয়দ রেজাউল করীম আরও বলেন, টেলিভিশন ও সিনেমায় সকল প্রকার অশ্লীল ছবি প্রদর্শন বন্ধ রাখতে হবে। রজমানে নিত্যপণ্যের মূল্য সহনশীল এবং তারাবীহ ও সেহরির সময় বিদ্যুৎ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে আহবান জানান। তিনি বলেন, শুধু উপবাস থাকাই রমজানের সাফল্যের শর্ত নয়, বরং উপবাসের সাথে যাবতীয় পাপ কাজ যেমন- মিথ্যা কথা বলা, গীবত করা, চোগলখোরী, অতি মুনাফাখোরী, কালোবাজারী, ঘূষ-দূর্নীতি, প্রতারণা ও প্রবঞ্চণার মতো ইসলাম বিরোধী কাজ থেকে বিরত না থাকলে রমজানের ফল পাওয়া যাবে না। পীর সাহেব চরমোনাই রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্যে জনগণের প্রতি আহবান জানান।
ইসলামী আন্দোলনের দেশব্যাপী স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশব্যাপী মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে গত দুদিন সারাদেশে স্বাগত মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সকল সমাবেশগুলোতে নেতৃবৃন্দ রমজানের পবিত্রতা রক্ষা, হোটেল রেস্তোরা বন্ধসহ সকল প্রকার অশ্লীলতা বন্ধে সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহবান জানান।
যে সকল জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি একযোগে পালিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, শেরপুর, মোমেনশাহী, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, খুলনা, নড়াইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চট্টগ্রাম মহানগর, বি-বাড়ীয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, ভোলা, বরগুনা, সিলেট, সুনামগঞ্জ মৌলভী, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, পাবনা জেলায় পৃথক পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও স্বাগত র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তবে কোন কোন জেলায় মিছিল বের করতে দেয়নি পুলিশ। যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যায়।