
নাজমুল হাসান, চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ আবদুর রব সড়ক (কাটা পাহাড় অংশ) ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
আজ শনিবার ২৭ এপ্রিল সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এ ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্টেশন হতে প্রাইভেট ভাড়া বাস এ করে সোহরাওয়ার্দী হল ঘুরে ফ্যাকাল্টি আসা-যাওয়া করতে হতো। এতে শিক্ষার্থীদের একদিকে সময়ের অপচয় এবং অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর অর্থ উক্ত খাতে ব্যয় হতো।
ইউজিসি চেয়ারম্যান তৎকালীন উপাচার্য থাকাকালীন উক্ত বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করে চবি রেলওয়ে স্টেশন থেকে সোজা ফ্যাকাল্টি আসা-যাওয়ার জন্য কাটা পাহাড় সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য তিনি তাঁর (উপাচার্যের) অফিসিয়াল গাড়ী রেল স্টেশনে রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে পায়ে হেটে দীর্ঘদিন অফিস করেছেন।
তাঁর তৎকালীন এ স্বপ্ন আজ বাস্তবে দৃশ্যমান হয়েছে এবং ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ঝড়-বৃষ্টিতে নিরাপদে পায়ে হেটে ফ্যাকাল্টিতে আসা-যাওয়া করতে পারে সে জন্য এ সড়কে ওয়াকওয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে পেরে তিনি নিজেকে অত্যন্ত আনন্দিত ও গৌরবান্বিত মনে করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান এ সড়কে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হওয়ায় বর্তমান চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শহীদ আবদুর রব সড়কের ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ যথাসময়ে সুসম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে স্বাগত ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। বিশেষকরে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন। এ জন্য তিনি ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণার জন্য দরকার নান্দনিক পরিবেশ। এ সত্যকে মাথায় রেখে বিগত সাড়ে তিনবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট, অফিস সংস্কার, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ এ বিশ্ববিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে, যা এখন সকলের কাছে দৃশ্যমান।
চবি উপাচার্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দের নামে হল প্রতিষ্ঠাসহ চবি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পরিবারের নামে এ সকল স্থাপনা প্রতিষ্ঠা চবি পরিবারসহ সকল মহলে ইতোমধ্যে অত্যন্ত প্রশংসা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আজকের এ ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন-অগ্রগতিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। তিনি এ নির্মাণ কাজের সার্বিক সফলতা কামনা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
পরে ইউজিসি চেয়ারম্যান এবং উপাচার্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে উক্ত ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ফলক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে দেশ-জাতির অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেজ আবু দাউদ মুহাম্মদ মামুন।
এ সময় চবি উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, চবি অনুষদসমূহের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, অফিস প্রধানবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।