সরকারি কলেজ, স্কুল, মসজিদ-মাদরাসাসহ চারপাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত। এর ঠিক মাঝখানে একটি ময়লার ভাগাড়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নাকের ডগায়ই ময়লার এ স্তুপ। নাক চেঁপে ধরে হাটতে হয় হয় সেখান থেকে। ছাত্র-ছাত্রী, পথচারী সবার চলাচলের এক নরক হয়ে আছে রাস্তাটি।
চা’য়ের রাজধানী মৌলভিবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এমনই এক রাস্তার পাশ থেকে নিজ গায়ে ময়লা লাগিয়ে ভাগাড়ের ময়লার স্তুপে দাড়িয়ে লাইভে এসে তা দেখালেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সামাজিক অ্যাক্টিভিস্ট ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
লাইভে দেখা যায়, স্বভাবগত ভঙ্গিতেই ব্যারিষ্টার সুমন ভিডিওতে হাজির হয়েছেন। চারপাশে মানুষজন দাড়িয়ে আছেন। পাশেই স্তুপাকৃতির ময়লার ভাগাড়। ব্যারিষ্টার সুমন নিজেই সেই ময়লার স্তুপে উঠে গেলেন এবং সেখান থেকে চারপাশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো দেখালেন। আশপাশের লোকজনকে ময়লার গন্ধে নাক চেঁপে ধরতে দেখা গেলেও ব্যারিষ্টার সুমন ছিলেন স্বাভাবিক। ময়লার স্তুপ নিয়ে তিনি বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন লাইভ ভিডিওটিতে।
তিনি অভিযোগ প্রকাশ করে বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান শ্রীমঙ্গলের এমন পরিবেশ সত্যিই অকল্পনীয়। স্থানীয় জেলা প্রশাসক থেকে নিয়ে এমপি, উপজেলা চেয়্যারম্যানসহ কেহই এ ময়লার স্তুপ সরানোর কার্যকরী উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় জনগণ ও ছাত্র-ছাত্রীরা বেশ কয়েকবার ময়লার স্তুপ সরানোর দাবি জানালেও সরানো হয়নি ময়লার ভাগাড়টি।
তিনি বলেন, এ স্থানটি থাকার কথা ছিলো স্কুল, মাদরাসাসহ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ কিন্তু তা না হয়ে এখানে হয়েছে ময়লার ভাগাড়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “শ্রীমঙ্গলের এই অমঙ্গল কীভাবে সহ্য করি বলেন”। তিনি স্থানীয় পৌর মেয়র সম্পর্কে তথ্য দিয়ে বলেন, শ্রীমঙ্গলে গত ১২ বছর ধরে পৌরসভা নির্বাচন হয় না এবং একজনই শ্রীমঙ্গল পৌরসভার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বরং ময়লার ভাগাড়টি এখানে রেখে দিয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, এখানের এই স্কুল মাদরাসাগুলোতে কোনো ভিআইপিরা তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়ায় না বরং তাদের সন্তানরা পড়াশোনা করেন বিদেশে বা ঢাকায়। তাদের সন্তান যদি এখানে পড়াশোনা করতো তাহলে তারা বুঝতে পারতো কতোটা কষ্টে এখানের এই ছেলে-মেয়েদের দিন যাচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন জনতার মতামত নিয়ে তিনি স্থানীয় জেলা প্রশাসকসহ পৌর মেয়র এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা যাতে এই ময়লার ভাগাড় সরাতে অতিদ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং এখানের প্রায় ১৭ হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার পরিবেশসহ সাধারণ মানুষের চলাচল করতে সুবিধা তৈরি করেন সে অনুরোধ জানান তিনি।
প্রসঙ্গত : ব্যারিষ্টার সায়েদুল হক সুমন তার কাজের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছেন। সারাদেশে ঘুরে ঘুরে তিনি অসঙ্গতিগুলো চোখের সামনে নিয়ে আসছেন সবার। বেশ কিছু সমস্যারও সমাধান করিয়েছেন তিনি। পুরান ঢাকায় এক ময়লার ভাগাড় নিয়ে লাইভ করে সেটিকে সরানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। যেন এ সকল অসঙ্গতি ব্যারিষ্টার সুমনের চোখেই পড়ছে। দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী যিনি কি না বসে থাকার কথা কোনো এসি রুমে বা আদালতপাড়ায় সেই তিনি যেখানেই কোনো অসঙ্গতি দেখেন সেখানেই নিজ থেকেই এর ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ভূমিকা রাখেন। তার এইসব কাজ যুব সমাজকে প্রচুরভাবে উদ্বুদ্ধ করছে সামাজিক কাজকর্মসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে। নিজ উদ্যোগে তারা অনেকেই এখন এসব কাজ করছেন সারাদেশে।
আরও পড়ুন : ব্যারিষ্টার সুমনের রিটে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি নিষিদ্ধ করলো আদালত
©এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস