
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও এর আশপাশের চারটি হোটেল ও তিনটি গির্জাসহ মোট আটটি স্থানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে ও বিকেলে দফায় দফায় এ বোমা হামলার পর আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে শ্রীলঙ্কার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যম বলেছে, সন্দেহভাজন এই ২৪ জনকে গতকাল রোববারের ঘটনায় যোগসাজশের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অবশ্য এই ২৪ জন কোনো সংগঠনের কি-না, তাও নিশ্চিত করে বলা হচ্ছে না।
কেউ এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ১০ দিন আগে সরকারকে সতর্কবার্তা দিয়ে জানান, ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত নামে একটি কট্টরপন্থি সংগঠন গির্জাগুলোতে আক্রমণ চালাতে পারে।
শ্রীলঙ্কায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে হামলা চালাতো তামিল গেরিলারা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘তামিল ইলাম’ নামে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৮৩ সাল থেকে সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে আসা এই গেরিলাদের প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণকে ২০০৯ সালে হত্যার মধ্য দিয়ে তাদের দমন করা হয়।

গতকাল রোববারের এই হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৫০ জন। নিখোঁজও রয়েছেন বেশ কিছু মানুষ। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের আ.লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ানও রয়েছে। এছাড়া প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ ভারতীয়ও।
গতকাল রোববার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপন করা হচ্ছিলো গির্জাগুলোতে। এর মধ্যেই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি গির্জায় বোমা হামলা হয়। আধঘণ্টার মধ্যেই হামলা হয় কলম্বোর ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেন্ট সেবাস্টিন গির্জা ও ২৫০ কিলোমিটার দূরে বাট্টিকালোয়ার জিওন গির্জায়।
প্রার্থনালয়গুলো যখন কাঁপছিল, সমানে হামলা হতে থাকে কলম্বোর অভিজাত কিংসবারি, সাংগ্রিলা এবং সিনামোন গ্র্যান্ড হোটেলে। এই হোটেলগুলোতে তখন বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক ছিলেন।
গোটা কলম্বোবাসী ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে না উঠতেই দেহিওয়ালা জেলার আরেকটি হোটেলে এবং দেমাতাগোদা জেলার একটি স্থাপনায় ফের হামলা হয়।
সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে একাধিক গির্জা ও হোটেলের ভেতরের জায়গা। মেঝেতে পড়েছিল রকাক্ত মরদেহ। আক্রান্ত এলাকায় পড়েছিল রক্তের ছোপ।
জিআরএস/পাবলিক ভয়েস