ললিপপে মজে থাকা শিশুটি জানে না তার শরীরে বাসা বেঁধে রয়েছে এই ভয়াবহ পরজীবী। কিন্তু তার বাবা-মা? তারাও কি একটু বেশি মাত্রায় উদাসীন?
চিকিৎকদের মতে, তাঁদের অজ্ঞানতাই আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় শিশুদের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। হ্যাঁ, প্রায় ৮৫ শতাংশ ভারতীয় শিশু কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হলেও বাবা মা প্রাথমিক ভাবে তা ধরতেই পারেন না। অথচ চিকিৎসকদের মতে, ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গুর থেকে কৃমি কম সাংঘাতিক নয়।
২০০৩ সালে ভারতীয় টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ মাঠের মধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে দেখা যায় এই ভয়ঙ্কর পরজীবী তাঁর মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটিয়েছে। ২০১৬ সালে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল নীহার থ্যাকারে নামক এক ১৬ বছরের কিশোর। এই পরজীবীর কারণেই প্রাণ গিয়েছিল তার।
শুধু দাঁতের ক্ষয় নয়, কৃমিতেও বিপজ্জনক মাত্রাতিরিক্ত ললিপপ আসক্তি।
কৃমি আসলে কী?
কৃমি এক ধরণের পরজীবী যা অন্ত্রে বাস করে। কিছু কৃমি খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আবার কিছু লার্ভা হিসেবে ত্বকের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কৃমি অনেক সময়ে মানুষের যকৃত এবং অন্য অঙ্গেও আক্রমণ করতে পারে।
কৃমি নানা রকমের হয়ে থাকে। কুঁচো কৃমির পাশাপাশি ২-৩ ইঞ্চি লম্বা কৃমিও হয়। এ ছাড়াও কোনও কোনও কৃমি ২-৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
কী ভাবে রোগ ছড়ায়?
কৃমির জীবাণু মূলত ছড়ায় দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমের। কৃমিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা পশুর মলের থেকেও মাধ্যমেও সংক্রমণ হতে পারে। মাটি থেকে শরীরের চামড়ার মাধ্যমে সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। অনেক সময় খোলা অবস্থায় রাখা স্যালাড থেকেও ঘটতে পারে বিভ্রাট।
রোগের উপসর্গ চিনুন
*অস্থিরতা, অকারণে অতিরিক্ত চিন্তা, অবসাদে ভোগা, আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়া।
*ক্তাল্পতা এবং আয়রন ডেফিশিয়েন্সি। কৃমি থাকলে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমতে কমতে অ্যানিমিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
*ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়া, র্যাশ, অ্যাকনে, চুলকুনি ইত্যাদি হওয়া।
*মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া।
*ঘুমনোর সময়ে মুখ থেকে লালা পড়া।
*অকারণে ক্লান্ত হয়ে পড়া।
*গা-হাত-পা ব্যথা।
*নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
*স্মৃতিভ্রম হওয়া।