 
    
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও দারুল উলুম হাটহাজারীর সহযোগী মহাপরিচালক আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, পহেলা বৈশাখের দিন নববর্ষ উদযাপনের নামে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করা মুসলমনাদের ঈমান-আক্বীদা বিরোধী একটি অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি।
আজ (১২ এপ্রিল) সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি এসব বলেন।
তিনি বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিনে নারী পুরুষের মুখে উল্কি আঁকা, বড়বড় পুতুল, হুতোম পেঁচা, হাতি, কুমির সাপ-বিচ্ছু ও ঘোড়াসহ বিভিন্ন জীব-জন্তুর মুখোশ পড়া প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ একসঙ্গে অশালীন পোশাক পরে অশ্লীল ভঙ্গিতে ঢোল বাদ্যের তালে তালে নৃত্য করে র্যালি করার হিন্দুয়ানী যে রীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমানদের ওপর জোর করে চালু করা হচ্ছে, তা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।
আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করার নির্দেশ দাতাদের নিকট প্রশ্ন রেখে বলেন, পহেলা বৈশাখে নতুন বছরের শোভাযাত্রায় কার কাছে মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে? জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তি কী মানুষের কোন কল্যাণ করতে পারে?
তিনি বলেন, মুসলমানদের ইসলামী বিধি-বিধান মানতে হবে। ইসলামী শরীয়ত মতে কোন জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তির কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করলে ঈমান থাকবে না। মুসলমানদের আকীদা হলো ভাল-মন্দ, মঙ্গল-অমঙ্গল সবকিছুই মহান আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয়।
মুসলমানদের কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর নিকট। আমরা সবসময় সুরা ফাতেহায় আল্লাহর নিকট কল্যান কামনা করি “ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন” হে আল্লাহ, আমরা একমাত্র আপনারই ইবাদত করি এবংআপনার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। সুতরাং যেসব মুসলমান আল্লাহর কাছে কল্যান কামনা করে তাদের জন্য বিজাতীয় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার সুযোগ কোনো নেই।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাসহ সকল অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকার জন্যে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্কুল কলেজের মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে ঈমান আকীদা বিরোধী সংস্কৃতি পালনে রাষ্ট্র কখনো বাধ্য করতে পারে না।
এটা সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা বিরোধী। কারণ, বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বিদ্যমান আছে। এ অবস্থায় কেউ ক্ষমতার জোরে সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশের জনগণের ওপর ভিন্ন ধর্মের অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে পারে না। ভিন্ন ধর্মের রীতিনীতি দেশের শতকরা ৯২ জন মুসলমানের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালালে তার পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি বলেন, আমরা দেশীয় রীতি ও সংস্কৃতি বিরোধী নই। তবে বাঙ্গালী সংস্কৃতির নামে মুসলমানদের ঈমান হরণ করার কোন হিন্দুয়ানী আয়োজন হলে নিরব বসে থাকতে পারি না। ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-সংস্কৃতি ধ্বংস করে বিজাতীয় কালচার মুসলমানরা মেনে নিতে পারে না।
আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী আরও বলেন, হিন্দু সমাজে শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিনে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তারা তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী পেঁচা, রামের বাহন হিসেবে হনুমান, দুর্গার বাহন হিসেবে সিংহের মুখোশ ও দেবতার প্রতীক হিসেবে সূর্য এবং অন্যান্য জীব-জন্তুর মুখোশ পরে মঙ্গল শোভাযাত্রা করে থাকে।
নারী-পুরুষ মুখে উল্কি আঁকা, জীবজন্তুর মুখোশ পরা, নারীরা লাল-সাদা শাড়ি পরা, কপালে শাখা-সিঁদুর লাগিয়ে সম্মিলিত উলুধ্বনি দেওয়া সবই হিন্দু ধর্মীয় রীতি। আমরা হলাম ইসলাম ধর্মের অনুসারী, সুতরাং মুসলমানদের জন্যে এসব পালনের কোনই সুযোগ নেই।
আইএ/পাবলিক ভয়েস